পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--Фо শ্ৰীকান্ত গাছের ছায়ার মধ্যে আসিয়া পড়ায়, অদূরেই সেই ঘাটটি চোখে পড়িল । ঘাটের কাকরে ডিঙি ধাক্কা না খায়, এই জন্য ইন্দ্র পূর্বদান্ত্রেই প্রস্থত হইয়া মুখের কাছে সরিয়া আসিল এবং লাগিতে ন লাগিতে লাফাইয় পড়িয়াই একটা ভয়জড়িত স্বরে ‘ইস করিয়া উঠিল। আমিও তাহার পশ্চাতে ছিলাম, সুতরাং উভয়েই প্রায় এক সময়েই সেই বস্তুটির উপর দৃষ্টিপাত করিলাম। তবে সে নীচে, আমি নৌকার উপরে। অকাল মৃত্যু বোধ করি আর কখনও তেমন করুণ ভাবে আমার চোখে পড়ে নাই! উভয়েই নির্ববাক, নিস্তব্ধ হইয়া চাহিয়৷ রহিলাম। একটি গৌরবর্ণ ছয়-সাত বৎসরের হৃষ্টপুষ্ট বালক— তাহার সর্ববাঙ্গ জলে ভাসিতেছে, শুধু মাথাটি ঘাটের উপর । শৃগালের বোধ করি জল হইতে তাহাকে এইমাত্র তুলিতেছিল, শুধু আমাদের আকস্মিক আগমনে নিকটে কোথাও গিয়া অপেক্ষ করিয়া আছে। খুব সম্ভব তিন-চারি ঘণ্টার অধিক তাহার মৃত্যু হয় নাই। ঠিক যেন বিসূচিকার নিদারুণ যাতনা ভোগ করিয়া সে বেচার মা-গঙ্গার কোলের উপরেই ঘুমাইয়া পড়িয়াছিল। মুখ তুলিয়া দেখি, ইন্দ্রর দুই চোখ বাহিয়া বড় বড় অশ্রুর ফোট ঝরিয়া পড়িতেছে। সে কহিল, তুই একটু সরে দাড় শ্ৰীকান্ত, আমি এ-বেচারাকে ডিঙিতে তুলে ঐ চড়ার ঝাউবনের মধ্যে জলে রেখে আসি । চোখের জল দেখিবামাত্র আমার চোখেও জল আসিতেছিল সত্য ; কিন্তু ছোয়া-ছুয়ির প্রস্তাবে আমি একেবারে সঙ্কুচিত হইয়। পড়িলাম। পরদুঃখে ব্যথা পাইয়া চোখের জল ফেলা সহজ নহে,