পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6.8 শ্ৰীকান্ত কম্পিতহস্তে ক্ষতটা বাধিতে লাগিলাম এবং শাহ জাঁ অদূরে বসিয়া মুমুমু বিষাক্ত সপের দৃষ্টি দিয়া নিঃশব্দে চাহিয়া দেখিতে লাগিল। ইন্দ্ৰ কহিল, ন, তোমাকে বিশ্বাস নেই, তুমি খুন করতে পার y আমি তোমার হাত বাধব । বলিয়া তাহারই গেরুয়ারঙে ছোপানো পাগড়ি দিয়া টানিয়া টানিয়া তাহার দুই হাত জড় করিয়৷ বাধিয়া ফেলিল, সে বাধা দিল না, প্রতিবাদ করিল না, একটা কথা পর্যন্ত কহিল না । যে লাঠিটার আঘাতে দিদি অচৈতন্য হইয়া পড়িয়াছিল, সেটা তুলিয়া লইয়া একপাশে রাখিয়া দিয়া ইন্দ্ৰ কহিল, কি নেমকহারাম সয়তান এই ব্যাটা ! বাবার কত টাকা যে চুরি করে একে দিয়েছি, আরও কত হয়ত দিতাম, যদি না দিদি আমাকে মাথার দিব্যি দিয়ে নিষেধ করত । আর স্বচ্ছন্দে ও ঐ বল্লমটা আমাকে ছুড়ে মেরে বসল ! শ্রীকান্ত, নজর রাখ, যেন না ওঠে—আমি দিদির চোখে-মুখে জলের ঝাপ্টা দিই। জলের ঝাপ্টা দিয়া বাতাস করিতে করিতে কহিল, যেদিন থেকে দিদি বললে, ইন্দ্রনাথ, তোমার রোজগারের টাকা হ’লে নিতাম, কিন্তু এ নিয়ে আমাদের ইহকাল পরকাল মাটি করব না, সেই দিন থেকে ঐ সয়তান ব্যাটা দিদিকে কত মার মেরেচে, তার হিসেব-নিকেশ নেই। তবু দিদি ওকে কাঠ কুড়িয়ে, ঘুটে বেচে খাওয়াচ্ছে, গাজার পয়সা দিচ্চে—তবু কিছুতে ওর হয় না। কিন্তু আমি ওকে পুলিশে দিয়ে তবে ছাড় ব—না হ'লে দিদিকে ও খুন ক’রে ফেলবে, ও খুন করতে পারে! দিদি যখন চোখ চাহিয়া উঠিয়া বসিলেন, তখন রাত্রি বোধ