পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डीकांस्ट مو مو চাহিয়া আমার আর একটা অমা-রজনীর কথা মনে পড়িয়া গেল । সে দিনটাও এমনি শনিবারই ছিল । বৎসর পাঁচ-ছয় পুর্বের্ব আমাদের প্রতিবেশিনী হতভাগিনী নিরুদিদি যখন সূতিকা-রোগে আক্রান্ত হইয়। মরেন, তখন সেই মৃত্যুশয্যার পাশে আমি ছাড়া আর কেহ ছিল না। বাগানের মধ্যে একখানি মাটর ঘরে তিনি একাকিনী বাস করিতেন। সকলের সর্ববপ্রকার রোগে, শোকে, সম্পদে, বিপদে এতবড় সেবাপরায়ণ, নিঃস্বাৰ্থ পরোপকারিণী রমণী পাড়ার মধ্যে আর কেহ ছিল না। কত মেয়েকে তিনি যে লেখাপড়। শিখাইয়া, সূচের কাজ শিখাইয়া, গৃহস্থালীর সর্বপ্রকার দুরূহ কাজকৰ্ম্ম শিখাইয়া দিয়া, মানুষ করিয়া দিয়াছিলেন, তাহার সংখ্যা নাই। একান্তস্নিগ্ধ, শান্তস্বভাব এবং সুনিৰ্ম্মল চরিত্রের জন্য পাড়ার লোকও তাহাকে বড় কম ভালবাসিত না । আমার পিসিম যে অত্যন্ত সঙ্গোপনে তাহাকে সাহায্য করিতেন, এ কথা আমি এবং বাটীর বুড়া ঝি ছাড়া আর জগতে কেহই জানে না। পিসিমা একদিন দুপুর-বেলা আমাকে নিভৃতে ডাকিয়া বলিলেন, বাবা শ্ৰীকান্ত, তোরা ত এমন অনেকেরই রোগে শোকে গিয়ে দেখিস্ ; এই ছুড়িটাকে এক-আধবার গিয়ে দেখিস না। সেই অবধি আমি মাঝে মাঝে গিয়া দেখিতাম এবং পিসিমার পয়সায় এটা—ওটা—সেট কিনিয়া দিয়া আসিতাম। তার শেষকালে এক আমিই কাছে ছিলাম। মরণকালে অমন পরিপূর্ণ বিকার এবং পরিপূর্ণ জ্ঞান আমি আর দেখি নাই। বিশ্বাস না করিলেও হে ভয়ে গা ছমছম করে, আমি সেই কথাটাই বলিতেছি।