পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R খুনির ছাই মাথায় মুখে মাখিয়া ফেললাম। চোখ টিপিয়া কহিলাম' বাবাজী, আয়না-টায়ন হ্যায় ? মুখখান যে ভারি একবার দেখতে ইচ্ছে হচ্চে । দেখিলাম, ভঁাহারও রসবোধ আছে । তথাপি একটু গম্ভীর হইয়৷ তাচ্ছিল্যাভরেই বলিলেন, হ্যায় একঠো । তবে লুকিয়ে আনো না একবার। মিনিট-দুই পরে আয়না লইয়া একটা গাছের আড়ালে গেলাম । পশ্চিমী নাপিতরা যেরূপ একখানি আয়না। হাতে ধরাইয়া দিয়া ক্ষৌরকর্ম সম্পন্ন করে, সেইরূপ ছোট একটুখানি টিন-মোড়া আরশি । তা হোক,Y একটুখানি দেখিলাম, যত্নে এবং সদা-বাবহারে বেশ পরিষ্কারচেহারা দেখিযা আর হাসিয়া বঁচি না । কে বলিবে-আমি সেই শ্ৰীকান্ত, যিনি কিছুকাল পূর্বেও রাজ-রাজড়ার মজলিসে বসিয়া বাঈজীর গান শুনিতেছিলেন। তা যাক । F ঘণ্টাখানেক পরে গুরু-মহারাজের সমীপে দীক্ষার জন্য নীত হইলাম। মহারাজ চেহারা দেখিয়া সাতিশয় প্ৰীত হইয়া বলিলেন, বেটা, মহিনী একআধা ঠহরে । মনে মনে বহুত আচ্ছা’ বলিয়া তার পদধূলি গ্ৰহণ করিয়া যুক্ত করে छखिछद्ध qकांश दनिलाभ । আজ কথায় কথায় তিনি আধ্যাত্মিকতার অনেক উপদেশ দিলেন । ইহার দুরূহতার বিষয়, ইহার গভীর বিরাগ এবং কঠোর সাধনার বিষয়, আজকাল ভণ্ড পাষণ্ডেরা কি প্রকারে ইহা কলঙ্কিত করিতেছে, তাহার বিশেষ বিবরণ, এবং ভগবৎপাদপদ্মে মতি স্থির করিতে হইলেই বা কি কি আবশ্যক, এতৎপক্ষে বৃক্ষজাতীয় শুষ্ক বস্তুবিশেষের ধূম ঘন-ঘন মুখ-বিবর দ্বারা শোষণ করতঃ নাসারঞ্জপথে শনৈঃ শনৈঃ বিনিৰ্গত করায় কিরূপ উপকার তাহা বুঝাইয়া দিলেন, এবং এ-বিষয়ে আমার নিজের অবস্থা যে অত্যন্ত আশাপ্ৰদ, সেই ইঙ্গিত করিয়াও আমার উৎসাহবৰ্ধন করিলেন । এইরূপে সে দিন মোক্ষপথের অনেক নিগুঢ় তাৎপৰ্য অবগত হইয় গুরুমহারাজের তৃতীয় চেলাগিরিতে বহাল হইয়া গেলাম।