পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छैकोस्छु না থাকিলে, যেমন কেন না। টাকাকড়ি, ঘরবাড়ি, বিদ্যাসাধ্যি দেখিয়া দাও, সমস্তই নিম্ফল। এবং এ সম্বন্ধে নামধাম, বিবরণাদি সহযোগে অনেকগুলি বিশ্বাসযোগ্য নজির তুলিয়াও বিফলতার প্রমাণ দেখাইয়া দিলেন। শুধু তাই নয়। অন্য পক্ষে এমনও কতকগুলি লোকের নাম উল্লেখ করিলেন, যাহারা আকাট-মুর্থ হইয়াও সুদ্ধমাত্র স্ত্রীর আয়-পয়ের জোরেই সম্প্রতি টাকার উপর দিবারাত্রি উপবেশন করিয়া আছে। আমি তাহাকে সবিনয়ে জানাইলাম যে, টাকা জিনিসটাব প্ৰতি আমার আসক্তি থাকিলেও চবিবশ ঘণ্টা তাহার উপরেই উপবেশন কবিয থাকাটা আমি গ্ৰীতিকবি বিবেচনা করি না এবং এজন্য স্ত্রীর আয়-পয যাচাই করিয়া দেখিবার কৌতুহলও আমার নাই। কিন্তু বিশেষ কোন ফল হইল না। তঁহাকে নিরস্ত করা গেল না। কারণ, যিনি সুদীর্ঘ তেরো বৎসর পরেও এমন একটা পত্রকে দলিল রূপে দাখিল করিতে পারেন, তঁহাকে এত সহজে ভুলানো যায় না। তিনি বার বার বলিতে লাগিলেন, ইহাকে মায়ের ঋণ বলিয়াই গ্ৰহণ করা উচিত এবং যে সন্তান সমর্থ হইয়াও মাতৃঋণ পরিশোধ করে না, সে - ইত্যাদি ইত্যাদি । যখন নিরতিশয় শঙ্কিত ও উদভ্ৰান্ত হইয়া উঠিয়াছি, তখন কথায় কথায় অবগত হইলাম, নিকটবর্তী গ্রামে একটি সুপাত্ৰ আছে বটে, কিন্তু পাঁচশত টাকার কম তাহাকে আয়ত্ত করা অসম্ভব ! একটা ক্ষীণ আশার রশ্মি চোখে পড়িল । মাসখানেক পরে যা হোক একটা উপায় করিব-কথা দিয়া, পাবদিন সকালেই প্ৰস্থান করিলাম, কিন্তু উপায় কি করিয়া করিব-কোনদিকে চাহিয়া তাহার কোন কিনারা দেখিতে পাইলাম না । আমার উপরে আরোপিত এই বঁাধনটা যে আমার পক্ষে সত্যকার বস্তু হইতেই পারে না, তাহা অনেক করিয়া নিজেকে বুঝাইতে লাগিলাম, কিন্তু তথাপি মাকে তঁাহার এই প্ৰতিশ্রুতির ফাস হইতে অব্যাহতি না দিয়া, নিঃশব্দে সরিয়া পড়িবার কথাও কোনমতে ভাবিতে পারিলাম না। বোধ করি, এক উপায় ছিল, পিয়ারীকে বলা, কিন্তু কিছুদিন পর্যন্ত এ সম্বন্ধেও মনস্থির করিতে পারিলাম না। অনেক দিন হইল, তাহার সংবাদ