পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&S 救 শ্ৰীকান্ত ষোল দিনের মধ্যে ওদিকে আর যাইতে পারি নাই । তাহা ছাড়া সারাদিন চাকরির উমেদারিতে ঘুরিতে ঘুরিতে এমনি পরিশ্রান্ত হইয়া পড়ি যে, সন্ধ্যার প্রাক্কালে বাসায় ফিরিয়া এ-শক্তি আর থাকে না যে কোথাও বাহিব হই । ক্রমশঃ যত দিন যাইতেছিল, আমারও ধারণা জন্মিতেছিল যে, এই সুদূর বিদেশে আসিয়াও চাকরি সংগ্ৰহ করা আমার পক্ষে ঠিক দেশের মতই সুকঠিন। অভয়ার কথা মনে পড়িল । যে লোকটির উপর নির্ভর করিয়া সে স্বামীর সন্ধানে গৃহত্যাগ করিয়া আসিয়াছে-সন্ধান না মিলিলে, সে লোকটির অবস্থা কি হইবে । বাড়ী ছাড়িয়া বাহির হইবাৰ পথ যথেষ্ট উন্মুক্ত থাকিলেও, ফিরিবার পথটিও যে ঠিক তেমনি প্রশস্ত পড়িয়া থাকে, বাংলা দেশের আবহাওয়ায় মানুষ হইয়া এত বড় আশার কথা কল্পনা করিবার সাহস আমার নাই । নিজেদের অধিক দিন প্ৰতিপালন করিবার মত অর্থবলও যে সংগ্ৰহ করিয়া তাহারা পা বাড়ায় নাই, তাহাও অনুমান করা কঠিন নয়। বাকী রহিল শুধু সেই রাস্তাটা, যাহা পনেব আনা বাঙ্গালীর একমাত্র অবলম্বন ; অর্থাৎ মাস-মাহিনায় পরের চাকরি *রিয়া মরণ পর্যন্ত কোনমতে হাড়-মাংসগুলাকে একত্র রাখিয়া চলা । রোহিণীবাবুরও যে সে ছাড়া পথ নাই, তাহা বলাই বাহুল্য। কিন্তু, এই রেঙ্গুনের বাজারে কেবলমাত্র নিজের উদরটা চালাইয়া লইবার মত চাকরি যোগাড় করিতে আমার যখন এই হাল, তখন একটি স্ত্রীলোককে কঁধে করিয়া সেই হাবা-গোবা বেচারাগোছের অভয়ার দাদাটির যে কি অবস্থা হইবে, তাহা মনে করিয়া আমার পর্যন্ত যেন ভয় করিয়া উঠিল। স্থির করিলাম, কাল যেমন করিয়াই হোক একবার গিয়া তাহদের খবর লইয়া আসিব । পরদিন অপরাহ্-বেলায় প্রায় ক্রোশ দুই পথ হাঁটিয়া তাহাদের বাসায় উপস্থিত হইয়া দেখিলাম, বাহিরের বারান্দায় একটি ছোট মোড়ার উপর রোহিণীদাদা আসীন রহিয়াছেন। তঁহার মুখমণ্ডল নব জলধারমণ্ডিত আষাঢ়ন্ত প্ৰথম দিবসের ন্যায় গুরুগম্ভীর; কহিলেন, শ্ৰীকান্তবাবু cब ! डॉक्ष ड् ?