পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

కి ễÂNV পরদিন হইতে পুনরায় নিজের চাকরির উমেদারিতে লাগিয়া গেলাম ; কিন্তু সহস্ৰ চিন্তার মধ্যেও অভয়ার চিন্তাকে মনের ভিতর হইতে ঝাড়িয়া ফেলিতে পারিলাম না । কিন্তু চিন্তা যাই করি না কেন, দিনের পর দিন সমভাবেই গড়াইয়া চলিতে লাগিল। এদিকে অদৃষ্টবাদী দা’ঠাকুবের প্রফুল্ল মুখ মেঘাচ্ছন্ন হইয়া উঠিতে লাগিল। ভাতের তরকারী প্ৰথমে পরিমাণে, এবং পরে ংখ্যায় বিরল হইয়া উঠিতে লাগিল ; কিন্তু চাকরি আমার সম্বন্ধে লেশমাত্ৰ । মত পরিবর্তন করিলেন না ; যে চক্ষে প্ৰথম দিনটিতে দেখিয়াছিলেন, মাসাধিক কাল পাবেও ঠিক সেই চক্ষেই দেখিতে লাগিলেন। কাহার *পরে জানি না, কিন্তু ক্ৰমশঃ উৎকষ্ঠিত এবং বিরক্ত হইয়া উঠিতে লাগিলাম। কিন্তু তখন ত জানিতাম না, চাকরি পাবার যথেষ্ট প্রয়োজন না হইলে আর ইনি দেখা দেন না । এই জ্ঞানটি লাভ করিলাম। হঠাৎ একদিন রোহিণীবাবুকে পথের মধ্যে দেখিয়া । তিনি বাজারে পথের ধারে তারিতারকারী কিনিতেছিলেন। আমি অনতিদূরে দাড়াইয়া নিঃশব্দে দেখিতে লাগিলামি-যাদিচ তাহার গায়ের জামাকাপড জুতা জীৰ্ণতাব প্ৰায় শেষ সীমায় পৌছিয়াছে।--তীক্ষ্ণ রৌদ্রে মাথায় একটা ছাতি পর্যন্ত নাইকিন্তু, আহাৰ্য দ্রব্যগুলি তিনি বড়লোকের মতই ক্রিয় করিতেছেন ; সেদিকে তাহার খোঁজাখুজি ও যাচাই-বাছাইয়ের অবধি নাই। হাঙ্গামা ও পরিশ্রম যতই হোক, ভাল জিনিসটি সংগ্ৰহ করিবার দিকে যেন তঁাহার প্রাণ পড়িয়া আছে। চক্ষের পলকে সমস্ত ব্যাপারটা আমার চোখে পড়িয়া গেল। এইসব কেনাকাটার ভিতর দিয়া ভঁাহার ব্যগ্র-ব্যাকুল স্নেহ যে কোথায় গিয়া পৌছিতেছে, এ যেন আমি সূর্যের আলোর মত সুস্পষ্ট দেখিতে পাইলাম। কেন যে এই সকল লইয়া ভঁাহার বাড়ী পৌছানো একান্তই চাই, কেন যে এই সকলের মূল্য দিবার জন্য চাকরি ভঁাহাকে পাইতেই হইল, এ সমস্যার মীমাংসা করিতে আর লেশমাত্র বিলম্ব হইল। না। আজ বুঝিলাম, কেন সে এই জনােরণ্যের মধ্যে পথ খুজিয়া পাইয়াছে এবং আমি পাই নাই । ঐ যে শীর্ণ লোকটি রেঙ্গুনের রাজপথ দিয়া, একরাশ মোট হাতে