পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

àęty gir লইয়া, শতচ্ছিন্ন মলিন বাসে গৃহে চলিয়াছে’-আড়ালে থাকিয়া আমি তাহার পরিতৃপ্ত মুখের পানে চাহিয়া দেখিলাম। নিজের প্রতি দৃকপাত করিবার তাহার যেন অবসরমাত্র নাই। হৃদয় তাহার যাহাতে পরিপূর্ণ হইয়া * আছে, তাহাতে তাহার কাছে জামাকাপড়ের দৈন্য যেন একেবারেই অকিঞ্চিৎকর হইয়া গেছে। আর আমি বস্ত্রের সামান্য মলিনতায় প্ৰতিপদেই যেন সঙ্কোচে জড়সড় হইয়া উঠিতেছি ; পথচারী একান্ত অপরিচিত লোকেরও দৃষ্টিপাতে লজ্জায় যেন মরিয়া যাইতেছি। রোহিণীদা চলিয়া গেল,-আমি তাহাকে ফিরিয়া ডাকিলাম না ; এবং পরীক্ষণেই লোকের মধ্যে সে অদৃশ্য হইয়া গেল। কেন জানি না, এইবার অশ্রুজিলে আমার দু'চক্ষু ঝাপসা হইয়া গেল। চাদরের খুটে চােখ মুছিতে মুছিতে পথের একধার দিয়া ধীরে ধীরে বাসায় ফিরিলাম এবং নিজের মনেই বারবার বলিতে লাগিলাম, এই ভালবাসাটার মত এত বড় শক্তি, এত বড় শিক্ষক সংসারে বুঝি আর নাই। ইহা পারে না, এত বড় কাজও বুঝি কিছু নাই । তথাপি বহু-বহু-যুগ-সঞ্চিত অন্ধ-সংস্কার আমার কানে কানে ফিসফিস করিয়া বলিতে লাগিল,-ভাল নয়, ইহা ভাল নয় । ইহা পবিত্র নয়,- শেষ পর্যন্ত ইহার ফল ভাল হয় না ! বাসায় আসিয়া একখানি বড় লেফাপার পত্ৰ পাইলাম। খুলিয়া দেখি, চাকরির দরখাস্ত মঞ্জুর হইয়াছে। সেগুন কাষ্ঠের প্রকাণ্ড ব্যবসায়ী-অনেক আবেদনের মধ্যে ইহারাই গরীবের প্রতি প্ৰসন্ন হইয়াছেন । ভগবান ऊँङ्ङ्ग भअछ कम । চাকরি বস্তুটির সহিত সাবেক পরিচয় ছিল না ; সুতরাং পাইলেও সন্দেহ রহিল, তাহা বজায় থাকিবে কি না । আমার যিনি সাহেব হইলেন, তিনি খাটি সাহেব হইলেও দেখিলাম, বেশ বাংলা জানেন । কারণ, কলিকাতার অফিস হইতে তিনি বদলি হইয়া বৰ্মায় গিয়াছিলেন। দুই সপ্তাহ চাকরির পর ডাকিয়া কহিলেন, শ্ৰীকান্তবাবু, তুমি ঐ টেবিলে আসিয়া কাজ করা-মাহিনাও প্ৰায় আড়াই গুণ বেশী পাইবে । প্ৰকাশ্যে এবং মনে মনে সাহেবকে এক লক্ষ আশীৰ্বাদ করিয়া হাড়