পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত ፉ ዓ ። বড় সাহেব দুঃখের সহিত জানাইয়াছেন যে, অভয়ার স্বামী প্ৰায় দুই বৎসর পূর্বে কি একটা গুরুতর অপরাধে কোম্পানীর চাকরি হইতে অব্যাহতি পাইয়া কোথায় গিয়াছো-ৰ্তাহারা অবগত নহেন। উভয়েই বহুক্ষণ পর্যন্ত স্তব্ধ হইয়া রহিলাম। অবশেষে অভয়াই প্ৰথমে কথা কহিল, বলিল, এখন আপনি কি উপদেশ দেন ? আমি ধীৰে ধীরে কহিলাম, আমি কি উপদেশ দেব ? অভয়া ঘাড় নাড়িয়া বলিল, না, সে হবে না। এ অবস্থায় আপনাকেই কর্তব্য স্থির করে দিতে হবে। এ চিঠি পাওয়া পৰ্যন্ত আমি আপনাব আশাতেই পথ চেয়ে আছি। মনে মনে ভাবিলাম, এ বেশ কথা ! আমার পরামর্শ লইয়া বাহির হইয়াছিলে কি না, তাই আমার উপদেশেবা জন্য পথ চাহিযা আছি ! অনেকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, বাড়ী ফিরে যাওষা সম্বন্ধে আপনার মত কি ? অভয়া কহিল, কিছুই না 7 বলেন, যেতে পারি । কিন্তু আমার ত সেখানে কেউ নেই । রোহিণীবাবু কি বলেন ? তিনি বলেন, তিনি ফিরবেন না। অন্ততঃ দশ বছর ও-মুখো হবেন না । আবার বহুক্ষণ মৌন থাকিয়া বলিলাম, তিনি কি বরাবর আপনার ভার নিতে পারবেন ? অভয়া বলিল, পরের মনের কথা কি করে জানব বলুন ? তা ছাড়া, তিনি নিজেই বা জানবেন কি করে ? বলিয়া ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া আবার নিজেই কহিল—একটা কথা। আমার জন্যে তিনি একবিন্দু দায়ী নান। দোষ বলুন, ভুল বলুন, সমস্তই একা আমার । গাড়োয়ান বাহির হইতে চীৎকার করিল, বাবু আর কত দেরি হবে ? আমি যেন বঁাচিয়া গেলাম। এই অবস্থা-সঙ্কটের ভিতর হইতে সহসা পরিত্রাণের কোন উপায় খুজিয়া পাইতেছিলাম না । অভয়া যে যথার্থই অকুল-পাথরে পড়িয়া হাবুডুবু খাইতেছে, আমার মন তাহা বিশ্বাস করিতে চাহিতেছিল না। সত্য, কিন্তু নারীর এত রকমের উল্টাপাল্টা অবস্থা আমি