পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓዓ শ্ৰীকান্ত এই নীচ-প্ৰকৃতির লোকগুলা যে অত্যন্ত ভীরু হয়, তাহা জানিতাম । সে চোখ মুছিয়া জিজ্ঞাসা করিল, সে কোথায় আছে ? কাল এমনি সময়ে আসবেন, তার ঠিকানা বলে দেব। লোকটা আর কোন কথা না কহিয়া দীর্ঘ সেলাম করিয়া প্ৰস্থান করিল। সন্ধ্যাবেলায় আমাব মুখ হইতে অভয়া নিঃশব্দে নতমুখে সমস্ত কথা শুনিয়া আঁচল দিয়া শুধু চোখ মুছিল, কিছুই বলিল না। আমার ক্রোধেরও সে কোন জবাব দিল না। অনেকক্ষণ পরে আবাব আমিই জিজ্ঞাসা করিলাম, তুমি তাকে মাপ করতে পারবে ? অভয়া শুধু ঘাড় নাড়িয়া তাহাব সম্মতি জানাইল । তোমাকে নিয়ে যেতে চাইলে যাবে ? সে তেমনি মাথা নাড়িয়া জবাব দিল । বর্মী-মেয়েদের স্বভাব যে কি, সে ত তুমি প্ৰথম দিনেই টের পেয়েচ, তবু সেখানে যাবাব সাহস হবে ? এবার অভয়া মুখ তুলিতে দেখিলাম, তাহার দুই চক্ষু দিয়া অশ্রুব ধারা বহিতেছে। সে কথা কহিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু পারিল না। তাব পরে বার বাব আঁচলে চোখ মুছিয়া রুদ্ধস্বরে বলিল, না গেলে আব্ব আমাব উপায় কি বলুন ? কথাটা শুনিয়া খুশি হইব, কি চোখের জল ফেলিব।--ভাবিয়া পাইলাম नों : किलु ऐखद्ध निड १ांख़िलाभ न । সেদিন আর কোন কথা হইল না । বাসায় ফিরিবার সমস্ত পথটা এই একটা কথাই পুনঃপুনঃ আপনাকে আপনি জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলাম, কিন্তু কোনদিকে চাহিয়া কোন উত্তর খুজিয়া পাইলাম না। শুধু বুকের ভিতরটা-তা সে কাহার উপর জানি না-একদিকে যেমন নিস্ফল ক্ৰোধে জলিয়া জ্বলিয়া উঠিতে লাগিল, অপরদিকে তেমনই এক নিরাশ্রয়া রমণীর ততোধিক নিরুপায় প্রশ্নে ব্যথিত, ভারাক্রান্ত হইয়া রহিল। পরদিন অভয়ার ঠিকানার জন্য যখন লোকটা সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল, তখন ঘূণায় তাহার প্রতি আমি চাহিতে পৰ্যন্ত পারিলাম না।