পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

r डैकाल ক্লেশ পাইতেছে, তাহা মনে মনে বুঝিয়াই, বোধ করি সেদিকে পা বাড়াইতে আমার প্রবৃত্তি হয় নাই। আজ ছুটির পূর্বেই গাড়ি ডাকিতে পঠাইয়া উঠি উঠি করিতেছি, এমন সময়ে অভয়ার পত্ৰ আসিয়া পড়িল। খুলিয়া দেখিলাম, আগাগোড়া লেখা রোহিণীর কথাতেই ভরা। যেন সর্বদাই তাহার প্রতি নজর রাখি,-সে যে কত দুঃখী, কত দুর্বল, কত অপটু, কত অসহায়*** এই একটা কথাই ছত্ৰে ছত্রে অক্ষরে অক্ষরে এমনি মৰ্মান্তিক ব্যথায় ফাটিয়া পড়িয়াছে যে অতি বড় সবল-চিত্ত লোকও এই আবেদনের তাৎপৰ্য বুঝিতে ভুল করিবে মনে হইল না। নিজের সুখদুঃখের কথা প্ৰায় কিছুই নাই । তবে নানা কারণে এখনও সে যে সেই-- খানেই আছে, যেখানে আসিয়া প্ৰথমে উঠিয়াছিল, তাহা পত্রের শেষে জানাইয়াছে। পতিই সতীর একমাত্র দেবতা কি না, এ-বিষয়ে আমার মতামত ছাপার অক্ষরে ব্যক্ত করার দুঃসাহস আমার নাই ; তাহার আবশ্যকতাও দেখি না। কিন্তু সৰ্বাঙ্গীণ সতীধর্মের একটা অপূৰ্বতা, দুঃসহ দুঃখ ও একান্ত অন্যায়ের মধ্যেও তাহার অভ্ৰভেদী বিরাট মহিমা-যাহা আমার অন্নদাদিদির স্মৃতির সঙ্গে চিরদিন মনের ভিতর জড়াইয়া আছে, এবং চোখে না। দেখিলে যাহার সৌন্দৰ্য ধারণ করাই যায় না-যাহা একই সঙ্গে নারীকে অতি ক্ষুদ্র এবং অতি বৃহৎ করিয়াছে,-আমার সেই যে অব্যক্ত উপলব্ধিতাহাই আজ এই অভয়ার চিঠিতে আবার আলোড়িত হইয়া উঠিল। জানি, সবাই অন্নদাদিদি নয়, সেই কল্পনাতীত নিষ্ঠুর ধৈৰ্য বুক পাতিয়া গ্ৰহণ করিবার মত অত বড় বুকও সকল নারীর থাকে না ; এবং হা নাই, তাহার জন্য অহরহ শোক প্ৰকাশ করা গ্ৰন্থকারমাত্রেরই গান্ত কর্তব্য কি না, তাহাও ভাবিয়া স্থির করিয়া রাখি নাই ; কিন্তু তবুও স্ত চিত্ত বেদনায় ভরিয়া গেল। রাগ করিয়াই গাড়িতে গিয়া উঠিলাম ; -৯ং সেই অ’ পর্যন্ত্রীতে আসক্ত রোহিণীকে বেশ করিয়া যে দু’কথা শুনাইয়া ਅੰ মনে মনে আবৃত্তি করিতে করিতে তাহার বাসার অভিমুখে রওনা হইলাম। গাড়ি হইতে নামিয়া, কপাট ঠেলিয়া যখন তাহার বাটিতে প্ৰবেশ করিলাম, তখন সন্ধ্যার দীপ জ্বালানো হইয়াছে, Arv ()-