পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

se শ্ৰীকান্ত একটু অগ্রসর হইতেই রাজলক্ষ্মী আমাকে চুপি-চুপি বলিল, তা হ’লে ত উনি অনায়াসে আমাদে; গাড়িতে যেতে পারেন ? ভাড়াও লাগবে। না-তাই কেন ওঁকে বল না ? বলিলাম, টিকিট নিশ্চয কেন। হয়ে গেছে-ভাড়াব টাকা ওঁর বঁাচবে a রাজলক্ষ্মী কহিল, তা’ হোক না কেন, ভিড়ের কষ্টটা ত বঁাচবে । কহিলাম, ওঁদের অভ্যাস আছে, ভিডেব কষ্ট গ্রাহ করেন না। বাজলক্ষ্মী তখন জিদ করিয়া বলিল, না না, তুমি ওঁকে বল। আমরা তিনজনে কথাবার্তাষ এতটা পথ বেশ যেতে পারব। বুঝিলাম, এক্ষণে সে নিজের ভুলটা টেব পাইয়াছে। বঙ্ক এবং নিজের চাকরিবাকিরদেব চোখেৰ উপর আমার সঙ্গে একাকী একটা আলাদা গাড়িতে উঠার দৃষ্টিকটুত্বটা এখন সে কোনমতে একটুখানি ফিকা করিয়া লাইতে চায়। তথাপি ইহাকেই আরও একটু চোখে আঙ্গল দিয়া দেখাইবার জন্য তাচ্ছিল্যের ভাবে কহিলাম, কাজ কি একটা বাজে লোককে গাডিতে ঢুকিযে ? তুমি যত পাের, আমাৰ সঙ্গে কথা ক’য়ে,- বেশ সময় কেটে যাবে। রাজলক্ষ্মী আমার প্রতি একটা তীক্ষু কটাক্ষ নিক্ষেপ করিয়া বলিল, সে আমি জানি । আমাকে জব্দ কববার এত বড় সুযোগ হাতে পেয়ে কি তুমি ছাড়তে পাবো।-এই বলিয়া সে চুপ করিল। কিন্তু ট্ৰেন ষ্টেশনে লাগিতেই আমি তাহাকে গিয কহিলাম, আপনি কেন আমাদের গাড়িতেই আসুন না। আমরা দুজন ছাড়া আব্ব কেউ নেই, ভিড়ের দুঃখটা আপনায় বঁচবে। বলা বাহুল্য, তাহাকে রাজী করাইতে ক্লেশ পাইতে হইল না, অনুরোধমাত্রই তিনি তাহার পুটলি লইয়া আমাদের গাড়িতে আসিয়া অধিষ্ঠিত হইলেন। ট্ৰেন গোটা-দুই ষ্টেশন পার না হইতেই রাজলক্ষ্মী ভঁাহার সহিত চমৎকার কথাবার্তা জুড়িয়া দিল, এবং আরও কয়েকটা ষ্টেশন উত্তীর্ণ