পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R of দীনতা, আজিকার পূর্বে তাহার ধারণাই যেন আমার ছিল না । শুক শূন্য বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্য দিয়া আমরা চলিয়াছি ; পথের ধূলা শিশিরে ভিজিয়া ভারি হইয়াছে ; তাহারই উপর দিয়া গাড়ীর চাকা এবং গরুর ক্ষুরের শব্দ কদাচিৎ শোনা যায়, আকাশে জ্যোৎস্না পাণ্ডুর হইয়া যতদূর দৃষ্টি যায়, ছড়াইয়া পড়িয়াছে। ইহারই ভিতর দিয়া শীতের এই স্তব্ধ নিশীথে আমরা অজানার দিকে ধীরে মন্থৰ গতিতে অবিশ্রাম চলিয়াছি; শীত-বস্ত্রে সর্বাঙ্গ আবুত করিয়া নীরব । কেবল এক সন্ন্যাসী আমাদের সঙ্গ লইয়াছে এবং এই পরিপূর্ণ স্তব্ধতার মাঝে তাহাবই মুখ দিয়া কেবল দেশের অজ্ঞাত ভাই-ভগিনীর অসহ্য বেদনার ইতিহাস যেন ঝলকে ঝলকে জ্বলিয়া জ্বলিয়া বাহির হইয়া আসিতেছে! এই সোনার মাটি কেমন করিয়া ধীরে ধীরে এমন শুষ্ক এমন রিক্ত হইয়া উঠিল, কেমন করিয়া দুশর সমস্ত সম্পদ বিদেশীৰ হাত দিয়া ধীরে ধীরে বিদেশে চলিয়া গেল, কেমন করিয়া মাতৃভূমির সমস্ত মেদ-মজ্জ'-রক্ত বিদেশীরা শোষণ করিয়া লইল, চোখের উপর ইহার জ্বলন্ত ইতিহাস যেন ছেলেটি একটি একটি করিয়া উদঘাটিত করিয়া দেখাইতে লাগিল । সহসা সাধু রাজলক্ষ্মীকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, মনে হয় তোমাকে যেন আমি চিনতে পেরেছি দিদি। মনে হয় তোমাদের মত মেয়েদের নিয়ে গিয়ে একবার তোমাদেরই ভাই-বোনদের নিজের চোখে দেখাই । রাজলক্ষ্মী প্ৰথমে কথা বলিতে পারিল না, তারপর ভাঙা গলায় কহিল, আমার কি সে সুযোগ হতে পারে আনন্দ ? আমি যে মেয়েমানুষ q कथा कि कब्र डूलद डाई? সাধু কহিলেন, কেন হতে পারে না দিদি ? আর তুমি মেয়েমানুষ এই কথাটাই যদি ভোলো, ত কষ্ট করে তোমাকে ও-সব দেখিয়ে আমার কি লাভ হবে ?