পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত wo ভয় কিরে । ও শিয়ালে শিয়ালে। লড়াই করছে।-আচ্ছা, আয়, আয়, আমার কাছে এসে বোস । আমার গলা দিয়া স্বর ফুটিল না-কোন মতে হামাগুড়ি দিয়া তাহার কোলেব কাছে গিয়া পড়িলাম। সে ক্ষণকালের জন্য আমাকে একবার স্পর্শ কবিয়া হাসিয়া কহিল, ভয় কি, শ্ৰীকান্ত ? কত রাত্তিরে এক আমি এই পথে যাই আসি-তিনবার রামনাম করলে কার সাfধ্য কাছে আসে । তাহাকে স্পৰ্শ করিয়া দেহটাতে যেন একটু সাড়া পাইলাম-অক্ষুটে কহিলাম, না ভাই, তোমার দুটি পায়ে পড়ি, এখানে কোথাও নেবে না, সোজা বেরিয়ে চল । সে আবাব আমাৰ কঁধে হাত ঠেকাহিয়া বলিল, না, শ্ৰীকান্ত একটি বাব যেতেই হবে । এই টাকা ক’টি না দিলেই নয়।--তারা পথ চেয়ে বসে আছে- আমি তিনদিন আসতে পারিনি । টাকা কাল দিয়ে না ভাই ! না ভাই, অমন কথাটি বলিসনে। আমার সঙ্গে তুইও চলা-কিন্তু কাঞ্চকে এ-কথা বলিসনে যেন। আমি অফুটে না? বলিয়া তাহাকে তেমনি স্পর্শ করিয়া পাথরের মত বসিয়া রহিলাম। গলা শুকাইয়া কাঠ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু হাত বাড়াইয়া জল লইব, কি নড-চড়ার কোনপ্রকার চেষ্টা করিব, এ সাধ্যই अभiद्ध छेिदन न । গাছেব ছায়ার মধ্যে আসিয়া পড়ায়, অদূরে সেই ঘাটটি চোখে পড়িল । যেখানে আমাদের অবতরণ করিতে হইবে, তাহার উপরে যে গাছপালা নাই, স্থানটি মান জ্যোৎস্নালোকেও বেশ আলোকিত হইয়া আছে-দেখিয়া অত দুঃখেও একটু আরাম বোধ করিলাম। ঘাটের কঁাকরে ডিঙি ধাক্কা না খায়, এইজন্য ইন্দ্ৰ পূৰ্বাহুেই প্ৰস্তুত হইয়া মুখের কাছে সরিয়া আসিল এবং লাগিতে না লাগিতে লাফাইয়া পড়িয়াই একটা ভয়জড়িত স্বরে ‘ইস করিয়া উঠিল। আমিও তাহার পশ্চাতে ছিলাম, সুতরাং উভয়েই প্ৰায় একসময়েই সেই বস্তুটির উপর দৃষ্টিপাত করিলাম। তবে সে নীচে, আমি নৌকার উপরে । ,