পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

CS छैकाछु করিয়া দেখিতে লাগিলাম। বাটীতে অনেকগুলি ঘর এবং সেগুলি মাটির ; তথাপি মনে হইল কাশীনাথ কুশারীর অবস্থা সচ্ছল ত বটেই বোধ হয়। একটু বিশেষ রকমই ভাল। প্ৰবেশ করিবার সময় বাহিরে চণ্ডীমণ্ডপের একধারে একটা ধানেব মরাই লক্ষ্য করিয়া আসিয়াছিলাম, ভিতরের প্ৰাঙ্গণেও দেখিলাম তেমনি আরও গোটা-দুই রহিয়াছে। ঠিক সম্মুখেই বোধ করি ওটা রান্নাঘরই হইবে, তাহারই উত্তরে একটা চালার মধ্যে পাশাপাশি গোটা-দুই টেকি, বোধ হইল অনতিকাল পূর্বেই যেন তাহাব কাজ বন্ধ করা হইয়াছে। একটা বাতাবী-বৃক্ষতলে ধান সিদ্ধ করিবার কয়েকটা চুল্লী নিকানো-মুছানো ঝরঝর করিতেছে এবং সেই পরিষ্কৃত স্থানটুকুর উপরে ছায়াতলে দুটি পরিপুষ্ট গো-বৎস ঘাড় কাৎ করিয়া আরামে নিদ্রা দিতেছে । তাদের মায়ের কোথায় বঁাধা আছে চোখে পডিল না। সত্য, কিন্তু এটা বুঝা গেল কুশারী পরিবাবে অল্পের মত দুগ্ধেবও বিশেষ কোন অনটন নাই। দক্ষিণের বারান্দার দেয়াল ঘোষিয়া ছয়-সাতটা বড় বড় মাটির কলসী বিড়ার উপর বসানো আছে। হয়ত গুড় আছে, কি, কি আছে জানি না, কিন্তু যত্ন দেখিয়া মনে হইল না যে তাহারা শূন্যগর্ভ কিম্বা অবহেলার বস্তু। কয়েকটা খুটির গায়েই দেখিলাম ঢেরা-সমেত পাট এবং শণের গোছা বাধা রহিয়াছে-সুতবাং বাটীতে যে বিস্তর দড়িদড়ার আবশ্যক হয়, তাহা অনুমান করা অসঙ্গীত জ্ঞান করিলাম না। কুশারীগৃহিণী খুব সম্ভব আমাদের অভ্যর্থনার কাজেই অন্যত্র নিযুক্ত, কৰ্ত্তাটি একবার মাত্র দেখা দিয়াই অন্তধান করিয়াছিলেন ; তিনি অকস্মাৎ ব্যস্ত-সমস্ত হইয়া উপস্থিত হইলেন, এবং রাজলক্ষ্মীকে উদ্দেশ করিয়া অনুপস্থিতির কৈফিয়ৎ আর একপ্রকারে দিয়া কহিলেন, মা এইবার যাই, আহিব্রুকটা সেরে এসে একেবারে বসি । বছর পনের-যালির একটি সুন্দর সবলকায় ছেলে উঠানের একাধারে দাড়াইয়া গভীর মনোযোগের সহিত আমাদের কথাবাৰ্ত্তা শুনিতেছিল ; কুশারী-মহাশয়ের দৃষ্টি তাহার প্রতি পড়িতেই বলিয়া উঠিলেন, বাবা হরিপদ, নারায়ণের অন্ন বোধ করি এতক্ষণে প্ৰস্তুত হ’ল, একবার ভোগটি দিয়ে এসো গে বাবা । আহিকের বাকিটুকু শেষ করতে আর আমার দেরী হবে না। আমার প্রতি চাহিয়া