পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छैखाल्नु 3 R বড় সুযোগ পাই না-সে বেচারা মানমুখে কেবলি মনে করিতে থাকে। তাহারই রান্নার দোষে আমার খাওয়া হইল না কোনমতে তাঁহাদেব সন্তুষ্ট করিয়া বিছানায় গিয়া বসি । সম্মুখের সেই খোলা জানাল অব সেই উষর প্রান্তরের তীব্ৰ তপ্ত হাওয়া । মধ্যাহের দীর্ঘ দিনমান কেবলমাত্র এই ছায়াহীন শুষ্কতার প্রতি চাহিয়া যখন আর কাটিতে চাহিত না, তখন একটা প্রশ্ন সবচেয়ে আমার বেশি মনে পড়িত, সে আমাদেব সম্বন্ধেব কথাটা । ভাল আমাকে সে আজও বাসে, ইত্যলোকে আমি তাব একান্ত আপনার, কিন্তু লোকান্তরে তার কাছে আমি তত বডই পাব । ততাব ধৰ্ম্মজীবনের আমি যে সঙ্গী নই, সেখানে আমাকে দাবি করিবাব যে কাহাৰ কোন দলিল নাই, হিন্দুঘরের মেয়ে হইয়া এ কথা সে ভুলে নাই । এই পৃথিবীটাই শুধু নয়, ইহারও অতীত যে স্থানটা আছে, পাথেয় তাহাব শুধু আমাকে কেবল ভালবাসিয়াই অজ্জন করা যাইবে না, এ সংশয় বোধ কবি খুব বড় করিয়াই তাহার মনে উঠিয়াছে। সে রহিল এই লইয়া, আর আমাব দিনগুলো কাটিতে লাগিল। এমনি করিয়া । কৰ্ম্মহীন, উদ্দেশ্যহীন জীবনের দিবারম্ভ হয় শ্রান্তিতে অবসান হয় অবসন্ন গ্লানিতে। নিজের আয়ুষ্কালটাকে নিজের হাত দিয়া প্ৰতিনিযত হত্যা করিয়া চলা ব্যতীত সংসারে আর যেন আমাব কিছু কবিবাব নাই । রতন আসিয়া মাঝে মাঝে তামাক দিয়া যায়, সময় হইলে চা আনিয়া দেয়-কিছু বলে না ; কিন্তু তাহার মুখ দেখিয়া বোধ হয়, সে পৰ্যন্ত আমাকে যেন কৃপার চক্ষে দেখিতে সুক করিয়াছে কখনো বা হঠাৎ আসিয়া বলে, বাবু, জানলাটা বন্ধ ক’রে দিন, আগুনের ঝলক আসছে। আমি বলি, থাক। মনে হয়, কত লোকের গায়ের স্পর্শ এবং কত না অচেনা লোকের তপ্ত শ্বাসের আমি যেন ভাগ পাই । হয়ত আমার সেই ছেলেবেলার বন্ধু ইন্দ্ৰনাথ আজিও বঁচিয়া আছে, এই উষ্ণ বাযু হয়ত তাহাকে এইমাত্ৰ ছুইযা আসিল । হয়ত সে আমারই মত তাহার অনেকদিনের সুখদুঃখের শিশু-সঙ্গীটিকে স্মরণ করিতেছে! আর আমাদের উভয়ের সেই অন্নদাদিদি। ভাবিতাম হয়ত এতদিনে তঁাহার সকল হুঃখের সমাপ্তি ঘটিয়াছে। কখনও মনে হয়, এই ক্ষেণেই ত বৰ্ম্মদেশ,