পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3డి কান্ত

  • উঠিল, কোনমতে বলিয়া ফেলিলাম, কোথাও আমাকে একটু শোবার জায়গা দিন, মিনিট-পাঁচেক সামলে নিয়েই আমি সমস্ত পরিষ্কার ক’রে দেবো। ভাবিয়াছিলাম প্ৰত্যুত্তরে কি যে শুনিব জানি না, কিন্তু আশ্চৰ্য্য, এই চক্ৰবৰ্ত্তী-গৃহিণীর ভয়ানক কণ্ঠস্বর অকস্মাৎ কোমল হইয়া উঠিল। এতক্ষণে তিনি অন্ধকার হইতে আমার সম্মুখে আসিলেন। বলিলেন, তুমি কেন বাবা পরিষ্কার করতে যাবে, আমিই সব সাফ ক’রে ফেলছি। বাইবের বিছানাটা এখনও ক’রে উঠতে পারি নি, ততক্ষণ এসে তুমি আমাৰ ঘরে গিয়ে শোবে ।

না বলিবার সামর্থ্যও নাই, নীরবে অনুসরণ করিয়া তাহারই শতছিন্ন শয্যায় আসিয়া চোখ বুজিয়া শুইয়া পড়িলাম। অনেক বেলায় যখন ঘুম ভাঙিল, তখন মাথা তুলিবারও শক্তি ছিল না, BB BDSS DBBB BD S DBDBB SBDS BBDD DSDDD LDDD DD অপবাধের যে এখন কেমন করিয়া কি জবাবদিহি করিব। এই কথা ভাবিয়া নিছক ও নিরবচ্ছিন্ন আতঙ্কেই আমাৰ দুই চক্ষু অশ্রু পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। মনে হইল বহুবার বহু নিকদেশ যাত্ৰাতেই বাহির হইয়াছি, কিন্তু এতখানি বিড়ম্বন জগদীশ্বর আব্ব কখনও অদৃষ্ট লিখেন নাই। আব্ব একবাব প্ৰাণপণে উঠিয়া বসিবার প্রয়াস করিলাম, কিন্তু কোনমতেই মাথা সোজা কবিতে না পারিয়া চোখ বুজিয়া শুইয়া পড়িলাম। আজ চক্ৰবৰ্ত্তী-গৃহিণীর সহিত মুখোমুখি আলাপ হইল। বোধ হয় অত্যন্ত দুঃখের মধ্য দিয়াই নারীর সত্যকার গভীর পরিচয়টুকু লাভ করা যায়। র্তাহাকে চিনিয়া লইবার এমন কষ্টিপাথর আর নাই, তঁহার হৃদয় জয় করিবার এত বড় অস্ত্ৰও পুরুষের হাতে আর দ্বিতীয় নাই। আমার শয্যাপাশ্বে আসিয়া বলিলেন, ঘুম ভেঙেছে বাবা ? চাহিয়া দেখিলাম । তঁহার বয়স বোধ হয় চল্লিশের কাছাকাছিকিছু বেশি হইতেও পারে ? রঙটি কালো, কিন্তু চোখ-মুখ সাধারণ ভদ্র গৃহস্থ-ঘরের মেয়েদের মতই। রুক্ষতার কোথাও কিছু নাই, আছে শুধু সৰ্ব্বাঙ্গ ব্যাপ্ত করিয়া গভীয় দারিদ্র্য ও অনশনের চিহ্ন আঁকা-চোখ মেলিয়া চাহিলেই তাহ ধরা পড়ে। কহিলেন, কাল আঁধারে দেখকে