পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*) » खैकाख् বিষয়-সম্পত্তি কিসের জন্য, যদি রসগ্ৰাহী রসিক সুজনদের ভোগেই না লাগে ? চৈত্রের প্রায় মাঝামাঝি। গাড়ীর কবাটটা গহর অকস্মাৎ শেষ পৰ্য্যন্ত ঠেলিয়া দিয়া বাহিরে মাথা বাড়াইয়া বলিল, দক্ষিণে বাতাসটা টের পাচ্চিস শ্ৰীকান্ত ? ffi5 || গহর কহিল, বসন্তকে ডাক দিয়ে কবি বলেছেন, “আজি দখিন দুয়ার খোলা-” কঁচা মেঠো রাস্তা, এক ঝাপটা মলয়ামিল রাস্তার শুকনো ধূলা আর রাস্তায় রাখিল না, সমস্ত মাথায় মুখে মাখাইয়া দিয়া গেল। বিরক্ত হইয়া বলিলাম, কবি বসন্তকে ডাকেন নি, তিনি বলেচেন এ সময়ে যমের দক্ষিণ দোর খোলা-সুতরাং গাড়ীর দরজা বন্ধ না করলে হয়ত সে-ই এসে হাজির হবে। গহর। হাসিয়া কহিল, গিয়ে একবার দেখবি চল। দুটো বাতাবি লেবুর গাছে ফুল ফুটেছে, আধিক্রোশ থেকে গন্ধ পাওয়া যায়। সুমুখের জাম গাছটা মাধবী ফুলে ভরে গেছে, তার একটা ডালে মাধবীর লতা, ফুল এখনো ফোটে নি, কিন্তু থোপা থোপা কুঁড়ি। আমাদের চারদিকেই ত আমের বাগান, এবার মৌলে মৌলে গাছ ছেয়ে গেছে, কাল সকালে দেখিস মৌমাছির মেলা ! কত দোয়েল, কত বুলবুলি আর কত কোকিলের গান। এখন জোছনা রাত কিনা, তাই রাত্রিতেও কোকিলের ডাকাডাকি থামে না। বাইরের ঘরের দক্ষিণের জানালাটা যদি খুলে রাখিস তোর দুচোখে আর পলক পড়বে না। এবার কিন্তু সহজে ছেড়ে দিচ্চি নে ভাই, তা আগে থেকে বলে রাখচি। তা ছাড়া খাবার ভাবনাও নেই, চকোক্তিমশাই একবার খবন্ধু পেলে হয়, তোরে গুরুর আদর করবে।