পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ye সেই পথের বহুকাল সঞ্চিত ভূপীকৃত ধূলাবালির বাধা ঠেলিয়া গাড়ী আমাদের কেবলমাত্র চাবুকের জোরেই অগ্রসর হইতেছিল, এমনি সময়ে গহর অকস্মাৎ উচ্চ কোলাহলে ডাক দিয়া উঠিল, গাড়োয়ান, আর না, আর না-থামো থামো-একদম রোকো ! সে এমন করিয়া উঠিল, যেন পাঞ্জাব-মেলের ব্যাপার। সমস্ত ভ্যাকুয়াম-ব্রেক চক্ষের নিমেষে কষিতে না পারিলে সর্বনাশের *gदन । গাড়ী থামিল। বঁ-হাতি পথটা তাহদের গ্রামে ঢুকিবার। নামিয়া পড়িয়া গহব কহিল, নেমে আয় শ্ৰীকান্ত। আমি ব্যাগটা নিচ্ছি, তুই নে বিছানাটা-চল। গাড়ী বুঝি আর যাবে না ? না। দেখচিসনে পথ নেই। তা বটে। দক্ষিণে ও বামে শিয়াকুল ও বেতসকুঞ্জের ঘনসম্মিলিত শাখা-প্ৰশাখায় পল্লী-বীথিকা অতিশয় সঙ্কীর্ণ। গাড়ী ঢোকাব প্ৰশ্নই অবৈধ, মানুষেও একটু সাবধানে কাৎ হইয়া না ঢুকিলে কঁটায় জামাকাপড়ের অপঘাত অনিবাৰ্য্য। অতএব কবির মতে প্ৰকৃতির সৌন্দৰ্য্য অনবদ্য। সে ব্যাগটা কঁধে করিল, আমি বিছানাটা বগলে চাপিয়া গোধূলিবেলায় গাড়ী হইতে অবতরণ করিলাম । কবিগৃহে আসিয়া যখন পৌছানো গেল তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে। অনুমান করিলাম আকাশে বসন্ত-রাত্রির চান্দও উঠিয়াছে। তিথিটা ছিল বোধ করি পূর্ণিমার কাছাকাছি, অতএব আশা করিয়া রছিলাম। গভীর নিশীথে চন্দ্ৰদেব মাথার উপরে আসিলে এ সম্বন্ধে নিঃসংশয় হওয়া যাইবে। গৃহের চারিদিকেই নিবিড় বেণুবন, খুব সম্ভব তাহার কোকিল, দোয়েল ও বুলবুলির দল এর