পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Svvr পরিচয় হইল। লোকটা যেমন রুক্ষ মেজাজের, তেমনি দাম্ভিক । তঁহার অনেক টাকা এই কথাটা সকলকে সৰ্ব্বক্ষণ স্মরণ করানো ছাড়া জগতে তাহার যে আর কোন কৰ্ত্তব্য আছে মনে হয় না । সমস্ত স্বোেপাজিত, সদম্ভে বলিলেন, মশাই, বরাত আমি মানি নে, যা করব তা নিজের বাহুবলে। দেবদেবতার অনুগ্রহ আমি ভিক্ষে করি নে। আমি বলি দৈবের দোহাই দেয় কাপুরুষে। বড়লোক বলিয়া এবং ছোটখাটাে তালুকদার বলিয়া গ্রামের প্ৰায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন, এবং অধিকাংশেরই বোধ করি তিনি মহাজন-এবং দুর্দান্ত মহাজন-অতএব সকলেই একবাক্যে র্তাহার কথাগুলো স্বীকার করিয়া লইলেন। তর্করত্ন মহাশয় কি একটা সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তি করিলেন, এবং আশেপাশে হইতে র্তাহার সম্বন্ধে দুই-একটা পুরাতন কাহিনীরও সূত্রপাত হইল। অপরিচিত সামান্য ব্যক্তি অনুমানে তিনি অবহেলাভরে আমার প্রতি কটাক্ষপাত করিলেন। টাকার শোকে আমার অন্তরটা তখন পুড়িতেছিল, দৃষ্টিটাি সহ্য হইল না, হঠাৎ বলিয়া ফেলিলাম, বাহুবল আপনার কি পরিমাণ আছে জানি নে, কিন্তু টাকা উপায়ের ব্যাপারে দৈব এবং বরাতের জোর যে যথেষ্ট প্ৰবল তা আমিও স্বীকার করি । তার মানে ? বলিলাম, মানে আমি নিজেই। বরকেও চিনি নে, কনেকেও না, অথচ টাকা যাচ্চে আমার এবং সে ঢুকচে গিয়ে আপনার সিন্দুকে । একে বরাত বলে না ত বলে কাকে ? এই বললেন, আপনি দেবদেবতার অনুগ্রহ নেন না, কিন্তু আপনার ছেলের হাতের আংটি থেকে বৌয়ের গলার হার পর্য্যন্ত তৈরী হবে যে আমারই অনুগ্রহের দানে। হয়ত বা বৌভাতের খাওয়ানটা পৰ্যন্ত আমাকেই যোগাতে হবে । ঘরের মধ্যে বজাঘাত হ’লেও বোধ করি সকলে এত বিচলিত ও