পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

st ri চিনিতে পারিয়া কহিলেন, ও:- তাই বটে। এর বাপের সঙ্গেই না। একবার আমার ভয়ানক ফৌজদারী মামলা বাধে ? ঠাকুর্দা বলিলেন, আজ্ঞে হঁ-কিছুই আপনি বিস্মৃত হন না। এ তারই ছেলে বটে, সম্পর্কে আমারও নাতি হয়। কালিদাসবাবু প্ৰসন্নকণ্ঠে বলিলেন, তা হােক। আমার বড় ছেলে বেঁচে থাকলে আজ এমনি বয়সই হতো । শশধরের বিয়েতে এসো বাবা । আমার পক্ষ থেকে সেদিন তোমার নিমন্ত্রণ রইলো । শশধর উপস্থিত ছিল, সে শুধু সকৃতজ্ঞ চােখে আমার প্রতি একটিবার মাত্র দৃষ্টিপাত করিয়াই পুনরায় মুখখানি আনত করিল। আমি উঠিয়া আসিয়া প্ৰণাম করিলাম, বলিলাম, যেখানেই থাকি, অন্ততঃ বৌভাতের দিনে এসে নববধূর হাতে অন্ন খেয়ে যাবো ; কিন্তু অনেক রূঢ় কথা বলেচি, আমাকে আপনি ক্ষমা कदम । বলিদাসবাবু বলিলেন, রূঢ় কথা যে বলেছে তা সত্যি, কিন্তু আমি ক্ষমাও করেচি ; কিন্তু উঠলে চলবে না। শ্ৰীকান্ত, শুভকৰ্ম্ম উপলক্ষে সামান্য কিছু খাবার আয়োজন করে রেখেচি, তোমাকে খেয়ে যেতে হবে । যে আজ্ঞে তাই হবে, বলিয়া পুনরায় বসিয়া পড়িলাম। সেদিন পাত্রকে আশীৰ্ব্বাদ করা হইতে আরম্ভ করিয়া সভান্থ অভ্যাগতগণের খাওয়াদাওয়া পৰ্য্যন্ত সমস্ত কাৰ্য্যই নির্বিবয়ে সুসম্পন্ন হইল। এই অধ্যায়ের প্রারম্ভে সদুপদেশ সম্বন্ধে যে নিয়মের উল্লেখ করিয়াছিলাম, পুটুর বিবাহটি তাঁহারই একটা ব্যতিক্রমের উদাহরণ । জগতে এই একটিমাত্রই নিজের চোখে দেখিয়াছি। কারণ, নিঃসম্পৰ্কীয়, অপরিচিতি, হতভাগ্য মেয়ের বাপের কান মলিলেই যেখানে টাকা আদায় হয়, সেখানে বৈষ্ণব সাজিয়া হাতজোড় করিয়া বাঘের গ্ৰাস হইতে নিস্তার পাওয়া যায় না। নিষ্ঠুর-হৃদয় বলিয়া গালিগালাজ করিয়া সমাজ ও অদৃষ্টকে