পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S St Niv ষ্টেশনে পৌছিলাম। ভাগ্য সুপ্ৰসন্ন, তখনই গাড়ী মিলিল। কলিকাতার বাসায় পৌছিতে অধিক রাত্ৰি হইবে না। টিকিট কিনিয়া উঠিয়া বসিলাম, বঁাশী বাজাইয়া সে যাত্রা সুরু করিল। ষ্টেশনের প্রতি তাহার মোহ নাই, সজল চক্ষে বার বার ফিরিয়া চাহিবাব তাহার প্রয়োজন হয় না । আবার সেই কথাটাই মনে পড়িল-দশটা দিন মানুষের জীবনে কতটুকু, অথচ কতই না বড়। কাল প্ৰভাতে কমললত একলা যাইবে ফুল তুলিতে। তারপরে চলিবে তাহার সারাদিনের ঠাকুরসেবা। কি জানি, দিন-দশেকের সাখী নতুনগোঁসাইকে ভুলিতে তাহার কাঁটা দিন লাগিবে। সেদিন সে বলিয়াছিল, সুখেই আছি গোঁসাই। র্যার পাদপদ্মে নিজেকে নিবেদন ক’বে দিয়েছি, দাসীকে কখনো তিনি পরিত্যাগ कदम न ! তাই হোক। তাই যেন হয়। ছেলেবেলা হইতে নিজের জীবনের কোন লক্ষ্যও নাই, জোর করিয়া কোনো কিছু কামনা করিতেও জানি না-সুখ-দুঃখের ধারণাও আমার স্বতন্ত্র। তথাপি, এতটা কাল কাটিল শুধু পরের দেখাদেখি, পরের বিশ্বাসে ও পরের হুকুম তামিল করিতে। তাই কোন কাজই আমাকে দিয়া সুনির্বাহিত হয় না । দ্বিধায় দুর্বল সকল সঙ্কল্প, সকল উদ্যমই আমার অনতিদূরে ঠোকর খাইয়া পথের মধ্যে ভাঙিয়া পড়ে। সবাই বলে অলস, অকেজো । তাই বোধ করি। ওই অকেজে বৈরাগীদের আখড়াতেই আমার অন্তরবাসী অপরিচিত বন্ধু অক্ষুট ছায়ারূপে আমাকে দেখা দিয়া গেলেন। বার বার রাগ করিয়া মুখ ফিরাইলাম, বার বার স্মিতহাস্তে হাত নাড়িয়া কি যেন ইঙ্গিত করিলেন। আর ঐ বৈষ্ণবী কমললন্ত । ওর জীবনটা যেন প্রাচীন বৈষ্ণক কবিচিত্তের অশ্রুজিলের গান। ওর ছন্দের মিল নাই, ব্যাকরণে ভুল