পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত eo দিল না। পরের বাড়ির যে কঠিন শাসনপােশ উপেক্ষা করিয়া তাহার সঙ্গে গিয়াছিলাম, তাহারও এতটুকু মৰ্যাদা রাখিল না । উপরন্তু অপয়া, অকৰ্মণ্য বলিয়া একান্ত অসহায় অবস্থায় বিদায় দিয়া স্বচ্ছন্দে চলিয়া গেল। তাহার এই নিষ্ঠুরতা আমাকে যে কত বিধিয়াছিল, তাহা বলিবার চেষ্টা করাও বাহুল্য । তারপরে অনেকদিন সেও আর সন্ধান করিল না, আমিও না । দৈবাৎ পথে-ঘাটে যদি কখনও দেখা হইয়াছে, এমন করিয়া মুখ ফিরাষ্টয়া আমি চলিয়া গিয়াছি, যেন তাহাকে দেখিতে পাই নাই। কিন্তু আমার এই 'যেন’টা আমাকে শুধু সারাদিন তুষের আগুনে দগ্ধ করিত, তাহার কতটুকু ক্ষতি কবিতে পারিত ? ছেলে-মহলে সে একজন মস্ত লোক ! ফুটবল ক্রিকেটের দলের কর্তা, জিমন্যান্টিক আখড়ার মাষ্টার, তাহার কত অনুচর, কত ভক্ত। আমি ত তাহার তুলনায় কিছুই নয়। তবে কেনই বা দু’দিনের পরিচয়ে আমাকে সে বন্ধু বলিয়া ডাকিল, কেনই বা বিসর্জন দিল ! কিন্তু সে যখন দিল, তখন আমিও টানাটানি করিয়া বঁাধিতে গোলাম না । আমার বেশ মনে পড়ে, আমাদের সঙ্গী-সার্থীরা যখন ইন্দ্রের উল্লেখ করিয়া তাহার সম্বন্ধে নানাবিধ অদ্ভুত আশ্চৰ্য গল্প শুরু করিয়া দিত, আমি চুপ করিয়া শুনিতাম। একটা কথার দ্বারাও কখনও ইহা প্ৰকাশ করি নাই যে, সে আমাকে চিনে, কিংবা আমি তাহার সম্বন্ধে কোন কথা জানি । সেই বয়সেই আমি কেমন করিয়া যেন জানিতে পারিয়াছিলাম, 'বড়' ও 'ছোট’র বন্ধুত্ব সচরাচর এমনি দাড়ায়। বোধ করি ভাগ্যবশে পরবর্তী জীবনে অনেক বড়’ বন্ধুর সংস্পর্শে আসিব বলিয়াই ভগবান দয়া করিয়া এষ্ট সহজ জ্ঞানটা আমাকে দিয়াছিলেন যে, কখনও কোন কারণেই যেন অবস্থাকে ছাড়াইয়া বন্ধুত্বের মূল্য ধাৰ্য করিতে না যাই। গেলেই যে দেখিতে দেখিতে ‘বন্ধু প্ৰভু হইয়া দাঁড়ান এবং সাধের বন্ধুত্ব-পাশ দাসত্বের বেড়ি হইয়া “ছোট’র পায়ে বাজে, এই দিব্যজ্ঞানটি এত সহজে এমন সত্য করিয়াই শিখিয়াছিলাম বলিয়া লাঞ্ছনার হাত হইতে চিরদিনের अड निशूडि °iाश्घ्रा बैंब्रिांछि । তিন চার মাস কাটিয়াছে । উভয়েই উভয়কে ত্যাগ করিয়াছি--তা বেদনা এক পক্ষের যত নিদারুণই হোক-কেহ কাহারও। খোজ করি না ।