পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

TRO কান্ত মিষ্টান্না ও-বেলার ঠাকুরের প্রসাদ। বহুক্ষণ অভুক্ত-অবিলম্বে বসিয়া গেলাম । অনতিবিলম্বে ঠাকুরের সন্ধ্যারতির শঙ্খ ঘণ্টা কঁাসরের শব্দ আসিয়া পৌঁছিল, জিজ্ঞাসা করিলাম, কই তুমি গেলে না ? না, আমার বারণ । বারণ ? তোমার ? তার মানে ? কমললতা স্নান হাসিয়া কহিল, বারণ মানে বারণ গোঁসাই। অর্থাৎ ঠাকুরঘরে যাওয়া আমার নিষেধ। আহারে রুচি চলিয়া গেল-বরণ করলে কে ? বড়গোসাইজীর গুরুদেব। আর র্যার সঙ্গে এসেছেন—তঁরা । কি বলেন তঁরা ? বলেন আমি অশুচি, আমার সেবায় ঠাকুর কলুষিত হন। অশুচি তুমি ? বিদ্যুদ্বেগে একটা কথা মনে জাগিল-সন্দেহ কি গহরকে নিয়ে ? হঁ্যা, তাই। কিছুই জানি না, তবুও অসংশয়ে বলিয়া উঠিলাম, এ মিথ্যে-এ egव । অসম্ভব কেন গোসাই ? তা জানি না। কমললতা, কিন্তু এত বড় মিথ্যে আর নেই। মনে হয় মানুষের সমাজে এ তোমার মৃত্যু-পথযাত্রী বন্ধুর ঐকান্তিক সেবার শেষ পুরস্কার ! তাহার চোখ জলে ভরিয়া গেল, বলিল, আর আমার দুঃখ নেই। ঠাকুর অন্তৰ্যামী, তার কাছে তা ভয় ছিল না, ছিল শুধু তোমাকে ? আজ আমি নিৰ্ভয় হয়ে বঁাঁচলুম, গোঁসাই। সংসারে এভালোকের মাঝে তোমার ভয় ছিল শুধু আমাকে ? আর কাউকে নয় ? না-আর কাউকে না। শুধু তোমাকে।