পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Lীকান্ত R r আজ আমি চলে যাচ্ছি গোসাই, বলিয়া ঘর হইতে বাহিরে আসিবার কালে মুখ তুলিয়া চাহিলেন, দেখি, চোখ দিয়া জল পড়িতেছে, আমাকে হাত তুলিয়া নমস্কার করিলেন, আমিও প্ৰতিনমস্কার করিয়া চলিয়া আসিলাম । ক্ৰমে অপরাহ্-বেলা সায়াহ্নে গড়াইয়া পড়িল, সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া রাত্ৰি আসিল, কিন্তু কমললতার দেখা নাই। নবীনের লোক আসিয়া উপস্থিত, আমাকে ষ্টেশনে পৌছাইয়া দিবে, ব্যাগ মাথায় লইয়া কিষণ ছটফটু করিতেছে-সময় আর নাই-কিন্তু কমললতা ফিরিল না । পদ্মার বিশ্বাস সে আর একটু পরেই আসিবে, কিন্তু আমার সন্দেহ ক্রমশঃ প্ৰত্যয়ে দাড়াইল-সে আসিবে না । শেষ বিদায়ের কঠোর পরীক্ষায় পরাস্মুখ হইয়া সে পূর্বাহুেই পলায়ন করিয়াছে, দ্বিতীয় বস্ত্ৰটুকুও সঙ্গে লয় নাই। কাল আত্মপরিচয় দিয়াছিল ভিক্ষুক বৈরাগিণী বলিয়া, আজ সেই পরিচয়ই সে অক্ষুন্ন রাখিল। যাবার সময় পদ্মা কঁাদিতে লাগিল। আমার ঠিকানা দিয়া বলিলাম, দিদি বলেছে আমাকে চিঠি লিখতে-তোমার যা ইচ্ছে তাই আমাকে লিখে জানিও পদ্মা । কিন্তু আমি ত ভাল লিখতে জানি নে গোঁসাই। তুমি যা লিখবে আমি তাই পড়ে নেবো। দিদির সঙ্গে দেখা ক’রে যাবে না ? আবার দেখা হবে পদ্মা, আজ আমি যাই, বলিয়া বাহির হইয়া পড়িলাম।