পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tR শ্ৰীগেীর উপদেশামৃত এই বলিয়া প্ৰভু চকিতের মত কোথায় চলিয়া গেলেন। প্রভুর এই প্রস্রাব ত্যাগ ব্যাপার অভেদ ব্ৰহ্মজ্ঞানের একরূপ পরীক্ষা ভিন্ন আর কি হইতে পারে ? বাস্তবিক অদ্বৈতবাদ সম্বন্ধে মুরারির ভ্ৰম-নিরসনের জন্যই প্রভুর এই শিক্ষা। এই গ্রন্থের তৃতীয় লহরীতে এতৎসম্বন্ধে বিচার দ্রষ্টব্য। এইরূপ সাবধান করা সত্ত্বেও মুরারির মোহ-বিকার বিদূরিত হয় নাই। তাই, আজ প্ৰভু মুরারির সহিত তৰ্কযুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হইলেন। প্ৰভু কহে-“ব্যাখ্যা করি আজি যে পড়িলা ৷” ব্যাখ্যা করে গুপ্ত, প্ৰভু খণ্ডিতে লাগিলা ৷ গুপ্ত বলে এক অর্থ, প্ৰভু বলে আর । প্ৰভু ভূত্যে কেহ কারে নারে জিনিবার ॥ প্রভুর কৃপায় মুৱারি পরম পণ্ডিত হইলেও শেষে পরাস্ত হইলেন। প্ৰভু সন্তুষ্ট হইয়া তাহার অঙ্গে পদ্ম হস্ত দিলেন। আর অমনি মুরারির সর্বাঙ্গ হর্ষ পুলকে কণ্টকিত হইয়া উঠিল। মুরারি বিস্ময় বিহবল হইয়া ভাবিতে লাগিলেন-“প্রাকৃত মনুষ্য কভু এ পুরুষ নয়।” সেই হইতে মুরারির মতিগতি পরিবৰ্ত্তিত হইল। মুরারি প্রভুর কৃপাশক্তি লাভে ধন্য হইলেন। এইরূপ বিদ্যাবিলাস-রঙ্গে কিছুদিন অতীত হইলে প্ৰভু নিজেই মুকুন্দসঞ্জয়ের চণ্ডীমণ্ডপে একটা টোল স্থাপন করিলেন। অল্পদিনের মধ্যেই প্রভুর অলৌকিক পাণ্ডিত্যপ্রমুণ-সৌরভে চারিদিক প্রমোদিত হইয়া উঠিল। প্ৰভু শিষ্যমণ্ডলী পরিবেষ্টিত হইয়া অধ্যাপনার কালে প্রায়ই অন্যান্য অধ্যাপকগণের প্রতি আক্ষেপ করিতেন। একদিন প্ৰভু কহিলেন-“সন্ধিকাৰ্য্য-জ্ঞান নাহি যার । কলিযুগে ভট্টাচাৰ্য্য পদবী তাহার ॥৯৷৷ শ্ৰীচৈঃ ভাঃ।। যাহারা সন্ধিকাৰ্য্য অর্থাৎ ব্যাকরণোক্ত বর্ণদ্বয়ের মিলনরূপ সন্ধিবৃত্তি জানেন না, হায়! কলিযুগে তাহারাই ভট্টাচাৰ্য্য নামে অভিহিত। ইহা প্রভুর শ্লেষোক্তি হইলেও ইহার আর একটি তাৎপৰ্য্য আছে। তখন শ্ৰীনবদ্বীপ জ্ঞানের রাজধানী ছিল বটে ; কিন্তু প্ৰকৃত জ্ঞানের আলোচনা আদৌ ছিলনা, বলিলে অত্যুক্তি হইবেন । শুষ্ক-জ্ঞানের উত্তপ্ত কটাহে শ্ৰীভগবত্তত্ত্ব বা ভক্তিবাদ পুড়িয়া ছাই হইয়া গিয়াছিল। সেই ধৰ্ম্মভাবশূন্য ঈশ্বরবাদ-বিরহিত জ্ঞানচর্চাই অধ্যাপকগণের জীবনের ব্রত এবং পাণ্ডিত্য দাম্ভিকতাই তঁহাদের