পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীগৌর উপদেশামৃত। ቄ ዓ ফলাদি ভিক্ষাদানে পরকে পোষণ করে না ? নদনদী সব কি শুকাইয়া গিয়াছে ? না, পৰ্ব্বত গুহা সকল রুদ্ধ হইয়াছে ? যদি তাহাই হয়, তবে ভক্তবৎসল শ্ৰীভগবান কি শরণাগত জনগণকে রক্ষা করেন না ? অতএব ভক্তজনের গ্ৰাসাচ্ছাদনের জন্য চিন্তা করা বৃথা । ইহা নিষ্কঞ্চন ভগবদ্ভক্তজনের আচরণীয় । এরূপ নিষ্কাম নির্ভরতায় দেহযাত্ৰা নিৰ্ব্বাহ করা সকলের পক্ষে সহজসাধ্য নহে। যে পরিমাণ ভোগ্য বিষয় দ্বারা দেহযাত্ৰা নির্বাহ হইতে পারে, বুদ্ধিমান ব্যক্তি তাহার জন্য যত্ন অবশ্যই করিবেন। ; কিন্তু নিজ সাধন সিদ্ধিতে সাবধান থাকিয় তাহাতে আসক্ত হইবেন না, এবং তাহা যে সুখপ্ৰদা নহে, ইহা নিশ্চয়বোধ করিবেন। আর অন্য কোন প্রকারে যদি দেহযাত্ৰা নির্বাহ সিদ্ধ হয়, তাহা হইলে ধনিকজনোপাসনাদি বৃথা পরিশ্রমের আবশ্যক করে না । এই জন্যই ভক্ত-শ্রেষ্ঠ শ্ৰীধর অকিঞ্চিৎকরা থোড় মোচা খোলা ইত্যাদি বিক্রয় দ্বারা অনাড়ম্বরে দেহযাত্ৰা নির্বাহ করেন। যিনি ব্রজলীলায় হাস্যকরী কুসুমাসব ছিলেন, তিনিই এই শ্ৰীগৌরলীলায় ব্ৰাহ্মণবংশসস্তৃত পণ্ডিত শ্ৰীধর। সাধারণতঃ ইনি “খোলা বেচা শ্ৰীধৱ” নামে বিখ্যাত। যথা, শ্ৰীগৌরগণোদেশ দীপিকায় খোলা বেচাতয়া খ্যাতঃ পণ্ডিতঃ শ্ৰীধরে দ্বিজঃ । আসীন্ধুজে হাস্যকারী যো নায়া কুসুমাসবঃ ॥ এই কারণেই প্ৰভু শ্ৰীধরের সঙ্গ পাইলে তঁহার সহিত নানা প্রকার মধুর কৌতুকালাপ না করিয়া সহজে ছাড়েন না। প্ৰভু শ্ৰীধরের কথা শুনিয়া পুনরায় রহস্যপূর্ণ বাক্যে হাসিতে হাসিতে বলিলেন,- , “-দেখি বস্ত্ৰ, গাঁঠি দশ ঠাঞি । ঘরে বোল, এই দেখিতেছি। খড় নাঞি ৷ দেখ এই চণ্ডী বিষহরি রে পূজিয়া । কে না ঘরে খায় পরে সব নগরিয়া ৷ চৈঃ ভাঃ ॥ ২৮ ৷৷ পরম ভাগবত শ্ৰীধর বিনয় মধুর বাক্যে উত্তর করিলেন,-“পণ্ডিত ! উত্তম কহিলেন বটে, কিন্তু তাহদেরও যেমন কাল কাটিতেছে, আমারও সেইভাবে কাল কাটিতেছে। রাজা রত্নময় প্রাসাদে থাকেন, দিব্য আহার করেন, দিব্য বেশভূষা পরিধান করেন ; পক্ষিগণ দেখ, বৃক্ষের উপরে বসিয়া বনের ফল খাইয়া জীবন যাপন করে। কিন্তু কাল উভয়ের পক্ষেই সমান