পাতা:শ্রীজৈবধর্ম্ম.djvu/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q о জৈবধৰ্ম্ম [ চতুর্থ নাম মায়াবিক্রম,—যদ্বারা জগতেব সমস্ত মায়িক বস্তু, কাল ও কৰ্ম্মের সৃষ্টি হইয়াছে। জীবের সহিত ভগবানের ষে সম্বন্ধ, ভগবানের সহিত, জীবেরও জড়ের যে সম্বন্ধ এবং জড়ের সহিত ভগবান ও জীবের যে সম্বন্ধ—এই সম্বন্ধের নাম সম্বন্ধতত্ত্ব । সম্বন্ধতত্ত্ব সম্যক্ জানিতে পারিলে সম্বন্ধজ্ঞান হয়। সম্বন্ধস্তানহীন ব্যক্তিগণ কোন প্রকারেই শুদ্ধবৈষ্ণব হইতে পারেন না । লাহিড়ী মহাশয় কঙ্গিলেন,—আমি বৈষ্ণবদিগের নিকট শুনিয়াছি যে, বৈষ্ণবগণ কেবল ভাবুকতার অধীন, তাহাদের কোন জ্ঞানের প্রয়োজন নাই। এ কথা কিরূপ ? আমি এ পর্য্যস্ত হরিনামকীৰ্ত্তনে ভাব সংগ্ৰহ করিবারই যত্ন করিয়াছি, সম্বন্ধ-জ্ঞান জানিতে চেষ্টা করি নাই । বাবাজী কহিলেন,—বৈষ্ণবের ভাবোদয়ই চরম ফল বটে। কিন্তু শুদ্ধ হওয়া আবশ্ব্যক । যাহারা অভেদ ব্রহ্মানুসন্ধানকে চরম ফল জানিয়া সাধন। মধ্যে ভাব শিক্ষা করেন, তাহাদের ভাব ও চেষ্টা শুদ্ধ ভাব নয় অর্থাৎ শুদ্ধভাবের ভাণ মাত্র। শুদ্ধভাব একবিন্দু হইলেও জীবকে চরিতার্থ করে, কিন্তু জ্ঞানবিদ্ধ ভাবুকত কেবল জীবের পক্ষে উৎপাত বলিয়া জানিবেন। হৃদয়ে যাহার অভেদ-ব্ৰহ্মভাব, তাহার ভক্তিভাব কেবল লোকবঞ্চন মাত্র । অতএব শুদ্ধভক্তদিগের সম্বন্ধজ্ঞান নিতাস্ত আবশুক । লাহিড়ী মহাশয় সশ্রদ্ধ হইয়া বলিলেন,—ব্রহ্ম অপেক্ষা উচ্চতত্ত্ব কি আছে ? ভগবান হইতে যদি ব্রহ্মের প্রতিষ্ঠা, তাহা হইলে জ্ঞানিলোকসকল কেন ব্ৰহ্মত্যাগ করিয়া ভগবদ্ভজন করেন নী ? * বাবাজী মহাশয় একটু হাস্ত করিয়া কছিলেন,–ব্রহ্মা, চতুঃসন, শুক, নারদ, দেবদেব মহাদেব সকলেই অবশেষে ভগবচ্চরণ আশ্রয় করিয়াছেন। লাহিড়ী মহাশয় বলিলেন,—ভগবান রূপবিশিষ্ট তত্ত্ব, অতএব সীমাবিশিষ্ট তিনি কিরূপে অসীম ব্রহ্মের আশ্রয় হইতে পারেন ?