পাতা:শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা - প্রসন্নকুমার শাস্ত্রী ভট্টাচার্য্য.pdf/৫২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Οζ Σ. ο শ্ৰীমদ্ভগবদগীতা । বিজাতীয় প্রত্যয়ানন্তরিতেন সজাতীয় প্রত্যয়প্রবাহেণ শ্রবণমননফলভূতেনাত্মচিন্তানেন নিদিধ্যাসনশব্দোদিতেন আত্মনি বুদ্ধৌ পশ্যন্তি সাক্ষাৎ কুৰ্ব্বস্তি আত্মানং প্রত্যকৃচেতনমাত্মনা ধ্যানসংস্কৃতেনান্তঃকরণেন কেচিদুত্তমাঃ যোগিনঃ । " মধ্যমানামাত্মজ্ঞানসায়নমাহ অন্যে মধ্যমাঃ সাংখ্যেন যােগেন নির্ধ্যাসনপূৰ্ব্বভাবিনা শ্রণমননরূপেণ নিত্যানিত্যবিবেকাদিপুর্বকেণ ইমে গুণত্ৰয়পরিণামা অনাত্মান সর্বে মিথ্যাভূতান্তাৎসাক্ষিভূতোদিত্যোবিভুনির্বিকারঃ সত্যঃ সমস্তজড়সংবন্ধশুন্যআত্মাহুমিত্যুেদ্ধং বেদান্তবাক্যবিচারজন্যেন চিন্তানেন পশ্যন্তাত্মািনমাত্মনীতি বৰ্ত্তন্তে ধ্যানােৎপত্তিস্থরেণেতার্থ। মন্দানাং জ্ঞানসাধনমাহ কৰ্ম্মযোগেন ঈশ্বরাপণবুদ্ধ্যা ক্রিয়মাণেন ফলাভিসন্ধির হিতেন তত্তম্বৰ্ণাশ্রমোচিতেন, বেদবিহিতেন কৰ্ম্মকলাপেন চাপরে মন্দাঃ পশুন্ত্যাত্মানিমাত্মনীতি বৰ্ত্তন্তে সত্বশুদ্ধ্যা শ্ৰৱণমননধ্যানােৎপত্তিদ্বারেণেতার্থী ॥ ২৪ ৷৷ বং, অ্য।” উক্ত আত্মতত্ত্ব দর্শনে চারি প্রকার উপায় আছে, তন্মধ্যে একটি মুখ্য উপায়, আর একটি গৌদ উর্দী আর একটি গৌণতর উপায়, এবং আর একটি গৌণতম উপায়। আবার, এই সংসারেও আত্মজ্ঞান বিষয়ে চারি প্রকার অধিকারী ব্যক্তি আছেন। কেহ উত্তম অধিকারী, কেহ মধ্যম অধিকারী, কেহ বা মন্দ অধিকারী, আর কেহ মন্দতর অধিকারী। ইহার মধ্যে যিনি উত্তম অধিকারী তিনি মুখ্য উপায়, যিনি মধ্যম অধিকারী তিনি গৌণ উপায়, আর যিনি মন্দ অধিকারী তিনি গৌণতর উপায়, এবং যিনি মন্দতর অধিকারী তিনি গৌণতম উপায়ের অবলম্বন করেন। জ্ঞানেন্দ্ৰিয়াশক্তি, কৰ্ম্মেন্দ্ৰিয়াশক্তি, এবং প্ৰাণাদি শক্তিগুলি প্ৰত্যাহারপূর্বক মনে লয় করিতে হয়, মনকে আবার অভিমানে বিলয় করিতে হয়, অভিমানকে বুদ্ধি তত্বে বিলীন করিতে হয়, বুদ্ধিকে প্রকৃতি তত্ত্বে বিলীন করিতে হয়, পরে প্রকৃতিও আত্মাতে বিলয় পাইয়া যায়, তখন কেবল মাত্র এক অদ্বিতীয় নিত্য, শুদ্ধ, বুদ্ধ মুক্তস্বভাব, সমস্ত ক্রিয়া গুণ ধৰ্ম্মাদি বিবর্জিত চৈতন্যময় আত্মাই অবশিষ্ট থাকেন, আর কিছুরই অস্তিত্বের ভান হয় না। এইরূপ অবস্থাকে “ধ্যান” বলে, এই ধ্যানই আত্মদর্শনের মুখ্য উপায় জানিবে। আর যাহারা সুখ দুঃখেতে সমজ্ঞান সম্পন্ন, অর্থাৎ র্যাহার সুখজনক ঘটনায়ও কিছুমাত্র আনন্দোচ্ছাস হয় না, আবার দুঃখজনক কোন ঘটনা হইলেও অণুমাত্র স্নান ভাব হয় না, সুতরাং সুখভোগের নিমিত্তও কিছুমাত্র অনুরাগ নাই, আবার দুঃখ ভোগের আশঙ্কায় ও কিছু মাত্র ভয় বা বিদ্বেষাদি নাই। যাহার দেহ, ইন্দ্ৰিয়, মন, বুদ্ধি প্রভৃতি কোন প্রকার জড় বস্তুতেই আত্মত্ব বােধ নাই, অর্থাৎ দেহাদি সমস্ত জড় পদার্থ হইতে সম্পূর্ণ পৃথক বস্তু বলিয়া যিনি আত্মাকে জানেন, সুতরাং এই দেহটা, অস্ত্ৰ শস্ত্ৰাদির দ্বারা, ছিন্ন বিচ্ছিন্ন, অথবা অগ্নিদ্বারা ভস্মসাৎ হইলেও “দেহ, আত্মা ময়” বলিয়া যিনি কিছুমাত্র ব্যথিত বা বিচলিত না হয়েন, এবং মন বা ইন্দ্ৰিয়াদির দ্বারা যত প্রকার’সুখ দুঃখাদি সমুৎপন্ন হয়, তাহার কোনটিকেই যিনি আপনার সুখদুঃখাদি বলিয়া অনুভব কল্কি-বিচলিত না হয়েন, যিনি "শত্রু মিত্ৰাদিতে সমদৰ্শী, ইত্যাদি লক্ষণযুক্ত মহাত্মাকে উত্তম অধিকারী বল্লা যায়। ইনিই ঐ পূর্বোক্ত মুখ্য' উপায়ের ( ধ্যানের) অবলম্বন করিয়া তাদৃশ ধ্যান-পরিসংস্কৃত চিত্তের দ্বারা, উত্তপ্ত লৌহ পিণ্ড যেরূপ তাপদ্বারা অনুস্থ্যুত্ত থাকে, সেই রূপ অনুস্থ্যত ভাবে অবস্থিত পরমাত্মাকে, আপন অন্তঃকরণ মধ্যেই সন্দর্শন করেন। প্রকৃতি