পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/২৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Soo রাজমালা । { দ্বিতীয় ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে অনেক রাজার অন্ধ-বিশ্বাস ছিল। মহারাজ দেবমাণিক্য স্বীয় গুরু লক্ষনীনারায়ণের প্ররোচনায় দেবতার দর্শন লাভের প্রত্যাশায় ধৰ্ম্মে অন্ধবিশ্বাস । ক্রমান্বয়ে আট জন সেনাপতিকে শ্মশানে নিয়া বলিদান করিয়াছিলেন। পরিশেষে এই অন্ধ-বিশ্বাসই র্তাহার মৃত্যুর কারণ হইয়াছিল, এ কথা পূর্বেই বলা গিয়াছে। ত্রিপুরেশ্বরগণের ধৰ্ম্মমত ও ধৰ্ম্মাচরণ সম্বন্ধীয় অনেক কথা আছে, তাহার aaa.pএ সম্যক আলোচনা এ স্থলে অসম্ভব। এক কথায় বলিতে গেলে বন্ধের পুষ্টি বিধান। রাজগণ চিরকালই সনাতন হিন্দু ধৰ্ম্মের পোষক এবং সংরক্ষক ছিলেন। রাজমহিষীগণ ধৰ্ম্মোদেশ্যে জীবন দান করিতেও কুষ্ঠিতা ছিলেন না, সহমরণের আধিক্যই এ কথার জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ। রাজাই প্রকৃতিপুঞ্জের আদর্শ, সর্ববদেশে সৰ্ব্বকালে প্রজাগণ রাজার আচার ব্যবহারের অনুকরণ করিয়াছে এবং বর্তমান কালেও তাহাই করিয়া থাকে। সে কালে ত্রিপুর রাজো, রাজনুশাসনের ফলে ধাৰ্ম্মিকের সংখ্যা অধিক ছিল, এবং ধৰ্ম্ম সাধন তাহদের জীবনের প্রধান ব্রুত বলিয়া গণ্য হইত, রাজমালায় এ কথার অনেক দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এইরূপ অবস্থায়ও সে কালে দেশে অধাৰ্ম্মিক লোক না ছিল, এমন নহে । রাজমালায় পাওয়া যায়, সে কালে কোন বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইবার সময় হরিবংশ গ্রন্থ, এবং শালগ্রাম শিলা স্পর্শ করা হইত। ইহা ধৰ্ম্মের প্রতি অটল বিশ্বাসের পরিচায়ক । কোন কোন পাপাশয় ব্যক্তি এরূপভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়ও সেই প্রতিজ্ঞ লঙ্ঘন করিতে কুষ্ঠিত হয় নাই। সেনাপতি গোপীপ্রসাদই এই শ্রেণীর লোকের মধ্যে সর্বপ্রধান । তিনি জামাতার মঙ্গল সাধনার্থ শালগ্রাম স্পর্শ করিয়া প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াও, পরিশেষে রাজ্যলোভে জামাতার বধ সাধন এবং স্বয়ং সিংহাসন অধিকার করিয়া প্রতিজ্ঞাভঙ্গের পপ অর্জন এবং ধৰ্ম্মের গ্লানি করিয়াছিলেন । তীর্থ স্থানের বিবরণ। ত্রিপুর রাজ্যে কতিপয় তীর্থস্থান আছে ; তন্মধ্যে উদয়পুরস্থ (মহাপীঠ ), উনকোট তীর্থ, ডম্বুর বা ডুঙ্গু তীর্থ এবং ব্রহ্মকুণ্ড তীর্থের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মহাপীঠের বিবরণ প্রথম লহরের টীকায় বর্ণিত হইয়াছে। রাজমালা লহরে যে সকল তীর্থের নামোল্লেখ আছে, তাহার বিবরণ নিম্নে সন্নিবিষ্ট ठो ।