পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ly • এলাহাবাদকে চন্দ্রবংশীয়গণের প্রথম রাজপাট বলিয়া নির্দেশ করায়, তিনি পুরাণের উপর অতিরিক্ত নির্ভর করিয়াছেন বলিয়া বৈদ্য মহাশয় তাহা গ্রহণের অযোগ্য মনে করিয়াছেন। ক্ষু পুরাণের এই উক্তি মানিতে হইলে বেদের সহিত বিরোধ ঘটে, ইহাই আধুনিক মত। কিন্তু কোথায় অসামঞ্জস্য ঘটে, অনুমান ছাড়া প্রমাণের দ্বার তাহা কেহ দৰ্শাইয়াছেন বলিয়া জানি না। বেদের যেরূপ অর্থমূলে আর্য্যগণের আদি অবস্থান নির্দেশ করা হয়, তাহা পূর্বেই প্রদর্শিত হইয়াছে। পুরাণের সংস্কৰ্ত্তাগণের উপর দোষারোপ করিবার কালে, পুরাণের প্রকৃত বাক্য কি ছিল, এবং সংস্কৰ্ত্তাগণ তাহার কি পরিবর্তন ঘটাইয়াছেন, তাহ প্রমাণদ্বারা দেখাইয়া দিলে বোধ হয় সাধারণের বিশেষ উপকারে আসিত। তাহ প্রদর্শিত না হওয়া পর্যন্ত পুরাণের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা সকলের পক্ষে সম্ভব হইবে বলিয়া মনে করা যাইতে পারে না । কারণ, পুরাণ সংস্কৰ্ত্তাগণকে যতই অনভিজ্ঞ বলা হউক না কেন, তাহারা জ্ঞানে না হইলেও অন্ততঃ বয়সে বৰ্ত্তমান কালের পণ্ডিত সমাজের জ্যেষ্ঠ ছিলেন এবং বর্তমান কালের স্যায় সে কালে শাস্ত্র গ্রন্থসমূহ দুই চারি জনের মুঠের ভিতর ছিল না, অন্ততঃ ব্রাহ্মণ মাত্রেই অল্লাধিক পরিমাণে তাহার আলোচনা করিতেন । বিশেষতঃ শাস্ত্রের বিকৃতি ঘটাইতে যাওয়া পাপ কাৰ্য্য বলিয়া তৎসময়ে সকলেরই বিশ্বাস ছিল । এরূপ অবস্থায় প্রকৃষ্ট যুক্তি প্রমাণ ব্যতীত পুরাণকে বিকৃত বলিয়া উপেক্ষা করা সঙ্গত হইবে কি না, তাহ বিশেষ বিবেচ্য। সচরাচরই দেখা যাইতেছে, র্যাহার। পুরাণের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন, প্রয়োজন স্থলে তাহারাও পুরাণের বচন আওড়াইয়া স্বীয় মত দৃঢ় করিতে সচেষ্ট । এতদ্বারা স্পষ্টই প্রতীয়মান হইবে, র্তাহারা কথায় যাহাই বলেন না কেন, কাৰ্য্যকালে পুরাণের মৰ্য্যাদা রক্ষা না করিয়া পারেন না। প্রকৃতপক্ষে পুরাণ উপেক্ষার বস্তু নহে। নীতি-শস্ত্রবেত্তা চাণক্য পণ্ডিত পুরাণকে চতুৰ্থবেদের অন্তভুক্ত করিয়াছেন। এবং ইতিহাসের সংজ্ঞায় বলা হইয়াছে—পুরাণ, ইতিবৃত্ত, আখ্যায়িকা, উদাহরণ এবং ধৰ্ম্মশাস্ত্র ইতিহাস নামে খ্যাত । নির্বর্বাসিত দ্রুহু্য প্রথম কোথায় উপনিবিষ্ট হইয়াছিলেন, তাহাও এক সমস্যার ...... বিষয় । ত্রিপুর ইতিহাসের মতে দ্রুহু স্বন্দরবনের সন্নিহিত স্থান নির্দেশক সগরদ্বীপে উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছিলেন। সগরদ্বীপস্থিত দণ্ডি""" গণের সহিত ঘনিষ্ঠত, ত্রিপুরেশ্বরের স্থাপিত ত্রিপুরাসুন্দর বিগ্রহ, এবং সগরদ্বীপে প্রতিষ্ঠিত শিবমন্দির ইত্যাদি দ্বারা এ বিষয় বিশেষভাবে প্রমাণিত হইয়াছে। + ত্রিপুরেশ্বরের প্রতিষ্ঠিত ‘ত্রিপুরাসুন্দরী’ মূৰ্ত্তি অদ্যপি তথায় বিদ্যমান থাকিয়া অতীতের স্মৃতি জাগরক রাখিয়াছেন। সুন্দরবনের স্যায় উপৰ্য্য পরি উত্থানপতনশীল ভূ-ভাগে মৃদূর অতীতের এতগুলি নিদর্শন থাকা সত্বেও তাহ উপেক্ষ

  • History of Mediaeval Hindu India—Vol. II, PP. 259—260, { রাজমালা—প্রথম লহর, পূৰ্ব্বভাষ দ্রষ্টব্য ।