পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y S 8 রাজমালা । { দ্বিতীয় বিরাজ করিতেছেন ; এবং প্রাচীন মন্দিরের চিন্তু এখনও বিদ্যমান রহিয়াছে । এই সকল অবস্থা পূর্বোন্ধত রাজমালার বাক্যের সহিত রেখায় রেখায় মিলিতেছে। মমু নদীর সন্নিহিত এরূপ অবস্থাপন্ন অন্য কোন স্থান নাই । সুতরাং ছামুলনগর উনকোটারই নামান্তর এবং তথাকার মন্দির মহারাজ ত্ৰিলোচন (সুবড়াই ) কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, এ বিষয়ে কোনরূপ মতদ্বৈধ থাকিতে পারে না । এই স্থানে অবস্থিত ইষ্টকরাশির গঠন দৃন্টেও তাহার প্রাচীনত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। পূর্বে বলা হইয়াছে, উনকোটার বিগ্রহসমূহ ত্রিপুরেশ্বরগণের প্রাচীন কীৰ্ত্তি বিগ্রহসমুহের প্রাচীনত্ব বলিয়া স্বীকার করা যাইতে পারে না । উপরোক্ত অবস্থা আলোচনা করিলে বুঝা যাইবে, মহারাজ ত্রিলোচন কর্তৃক মন্দির নিৰ্ম্মিত হইবার পূর্বেও এই স্থান তীর্থক্ষেত্ররূপে গণ্য ছিল, এবং ত্ৰিলেচন মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন মাত্র ; তৎকর্তৃক বিগ্রহ স্থাপনের কথা রাজমালায় বা অন্য কোনও গ্রস্থে নাই । ত্রিলোচনের পূর্বের্ণ, কৈলাসহর অঞ্চলে ত্রিপুরেশ্বরগণের وية _ প্রভুত্ব স্থাপনের প্রমাণাভাব, সুতরাং তাহার পরবর্তী রাজগণের দ্বারা উনকোটার মূৰ্ত্তিসমূহ প্রতিষ্ঠিত হইবার সম্ভাবনাও দৃষ্ট হয় না। সম্যক অবস্থা পর্যালোচনা করিলে ইহা মহর্ষি কপিল এবং মনুর কীৰ্ত্তি বলিয়াই প্রতীয়মান হয় । ২ মূৰ্ত্তি সমূহ এক সময়ের নিৰ্ম্মিত ও খোদিত নহে, অবয়ব দুটে অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি এরূপ সিদ্ধান্ত করেন। উক্ত ঋষিদ্বয়ের মধ্যে একের কার্য অন্যের কাৰ্ঘ্যের পরবর্তী কালে সাধিত হইয়াছিল, ইহা সুনিশ্চিত ; সুতরাং বিশেষজ্ঞগণের উক্তরূপ সিদ্ধান্ত অমূলক বলিয়া মনে হয় না। ঋষিদ্বয়ের পরবর্তী কালেও কোন কোন মুৰ্ত্তি ত্রিপুরেশ্বরগণ কর্তৃক স্থাপিত হওয়া বিচিত্র নহে। এই স্থান যেমন নির্জন, তেমনি মনোরম ৷ উনকোট ছড়া যে স্থানে প্রস্তরের ফাঁক দিয়া প্রবাহিত হইতেছে, সেই স্থানটা অতি সুন্দর। পুরাকালে উনকোটা বিশেষ জাগ্ৰত তীর্থ ছিল ; স্থানের অবস্থা দৃস্টে ইহা উনকে (টী তীর্থের স্পষ্টই প্রতীয়মান হয়। পরবর্তী কালে এই তীর্থে যাত্রী সমাগম প্রাচীন ও আধুনিক হ্রাস হইবার বিশেষ কোন হেতু ছিল, এরূপ অনুমান করা অবস্থ। । অস্বাভাবিক নহে । অভিনিবেশ চিত্তে আলোচনা করিলে দেখা যাইবে, সে কালে এই স্থান নিতান্ত দুৰ্গম ছিল, এবং ইহার আশে পাশে বিস্তর

  • ভবিষ্ণু পুরাণস্থ ব্রহ্মখণ্ডের ১৯শ অধ্যায়ে লিখিত আছে ;—

“মেয়ানছ। পূৰ্ব্বকচ্ছে দ্বিসহস্র ব্যতীক্রমে। কপিল লিঙ্গ সন্নিধে গ্রামোহি নব পালকঃ ”—৪২ শ্লোক । অনেকে মনে করেন, এই শ্লোকোক্ত মেয়া নদীর পূৰ্ব্বতীরবর্তী কপিল লিঙ্গ ও উনকোট তীর্থস্থিত শিবলিঙ্গ অভিন্ন । এই ধারণা অসঙ্গত বলিয়া মনে হয় না । আসামস্থ কপিলাশ্রমে স্থাপিত লিঙ্গের নাম “সিদ্ধেশ্বর শিব” । উনকোটী তীর্থ ব্যতীত তদঞ্চলে অন্য কোন স্থানে কপিল মুনি স্থাপিত অন্ত শিব নাই। সুতরাং এই তীর্থের শিবই ‘কপিল লিঙ্গ” নামে অভিহিত হওয়া সম্ভবপর।