পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } মধ্য-মণি । ১২১ “বিনন্দিয়া সৈন্য” নামে অভিহিত হইয়া থাকে। বর্তমানকালে বিনন্দিয়গণ পর্বত্য অঞ্চলে, কিয়ৎ পরিমাণে পুলিশের কার্য্যও করিয়া থাকে। ৫ প্রধান সেনাপতিগণের নারায়ণ উপাধি ছিল, এ কথা পূর্বেই বলা হইয়াছে। এই উপাধি ধন্যমাণিক্যের সময়ে আরম্ভ হইয়া সুদীর্ঘ কাল প্রচলিত থাকিবার পরিচয় পাওয়া যায়। মোগল সম্রাট আকবরের মন্ত্রী আবুল ফজল কৃত আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে লিখিত হইয়াছে,— “ভাট রাজ্যের সহিত সংলগ্ন একটা স্বাধীন রাজ্য আছে। সেই রাজ্যের নাম তিপ্রা (ত্রিপুর ) । * * * * সেই রাজ্যের আমীর ওমরাহগণ “নারায়ণ” উপাধি প্রাপ্ত হইয়া থাকেন।” আবুল ফজলের এই উক্তি অভ্রান্ত নহে ; কিন্তু তাহার ভ্রম জন্মিবার একটা কারণ ছিল। সেকালে নারায়ণ উপাধি বিশিষ্ট প্রধান সেনাপতিগণই রাজ্যশাসন এবং মন্ত্রীত্ব করিতেন। রাজপুত্ৰগণ সেনাপতি পদে বরিত হইয়া “নারায়ণ” উপাধি লাভ করিবার দৃষ্টান্তও অনেক আছে। এই সকল অবস্থা দর্শন করিয়াই আবুল ফজল উক্ত উপাধি “আমীর ওমরাহ”গণের লভ্য বলিয়া বিশ্বাস করিয়াছেন। প্রকৃতপক্ষে ইহা প্রধান সেনাপতিগণের উপাধি। রাজমালা দ্বিতীয় লহরে রণচতুর নারায়ণ, রসাঙ্গমৰ্দ্দন নারায়ণ, দৈত্য নারায়ণ, গজভীম নারায়ণ, বিজয়দুল্লভ নারায়ণ, গোপীপ্রসাদ নারায়ণ, রণাগণ (রঙ্গ) নারায়ণ, চন্দ্ৰসিংহ নারায়ণ, উড়িয়া নারায়ণ (ইহার নাম ছিল ভাঙ্গিল ফা), ৭ আগুয়ান নারায়ণ, অরিভীম নারায়ণ, গরুড়ধ্বজ নারায়ণ, সমরজিৎ নারায়ণ ও রাজবল্লভ নারায়ণ প্রভূতির নাম পাওয়া যায়, ইহারা সকলেই সেনাপতি ছিলেন এবং তন্মধ্যে অনেকের হস্তে শাসন ভারও ছিল । রাজমালা তৃতীয় লহর আলোচনায় জানা যায়, অমরমাণিক্য র্তাহার পুত্র চতুষ্টয়কে সেনা নেতৃত্বে বরণ করিয়া ‘নারায়ণ’ উপাধি প্রদান করিয়াছিলেন, যথা ;– “অমরাবতী মহাদেবী সতী পতি মতি। তান গর্ভে চারি পুত্র যোগ্যবান অতি ॥ রাজদুল্লভ নারায়ণ, রাজধর ধীর । অমরদুল্লভ নারায়ণ, যুঝার সিংহীর ॥ চারি পুত্ৰ নৃপতির পদবী নারায়ণ । সিংহাসনে বসে রাজা অতি সুশোভন ॥” অমরমাণিক্য *}\9א মায়ায়ণ উপাধি ।

  • এতৎসম্বন্ধে কৈলাস বাবু লিখিয়াছেন,—“গভর্ণমেণ্টের পুলিশ পদাতিগণের দ্যায় “বিনন্দিয়া” আখ্যা বিশিষ্ট ত্রিপুরাপতির এক প্রকার সৈন্ত বা পেয়াদা ছিল। ইহাদের সরদার লাজির উপাধি প্রাপ্ত হইতেন । মহারাজের সম্পর্কিত ব্যক্তিগণ এই নাজির পদ লাভ बब्रिग्नांtझन ।’ কৈলাস বাবুর রাজমালা—১ম ভাগ, ৪র্থ অঃ, ৪৯ পৃঃ ।

+ “ভাঙ্গিল ফণ নামেতে উড়িয়া সারায়ণ । কামানের গোলাঘাতে তাহার মরণ ॥” জয়মাণিক্য খণ্ড ।