পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* १४ রাজমালা । { দ্বিতীর বোধ হয় এই সূত্রই অবলম্বন করিয়াছেন। কিন্তু যিনি বত্রিশ বৎসর মাত্র রাজত্ব করিয়াছেন, এবং ১৩৮০ শকে যিনি রাজপদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, র্তাহার রাজ্যাভিষেক ১৩২৯ শকে হইতে পারে না। অপিচ, লঙ সাহেব রাজমালার মতানুবৰ্ত্তী হইয়া, ধৰ্ম্মমাণিক্যের রাজত্বকাল বত্রিশ বৎসর নিদ্ধারণ করিয়া থাকিলেও তিনি ১৪৩৯ খৃষ্টাব্দে (১৩৬১ শক) রাজত্বকাল শেষ হইবার সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ায়, পূর্বোক্ত কারণে এই নির্বর্বাচন প্রামাণ্য বলিয়া গ্রহণ করা যাইতে পারে না । এ বিষয়ে রাজমালা ব্যতীত নির্ভরযোগ্য অন্য প্রমাণ নাই ; পূর্বোক্ত ব্যক্তিগণ রাজমালার মত উল্লঙ্ঘন করিয়া ভ্ৰমবত্মে পাদবিক্ষেপ করিয়াছেন, একথা নিঃসঙ্কোচে বলা যাইতে পারে । পক্ষাস্তরে, দ্বিজ বঙ্গচন্দ্রের রচিত ‘ত্রিপুর বংশাবলী’ নামক হস্তলিখিত পুথিতে পাওয়া যায়, ধৰ্ম্মমাণিক্য ৮৪১ হইতে ৮৭২ ত্রিপুরাব্দ পর্য্যন্ত রাজ্য শাসন করিয়াছেন । এতদনুসারে তাহার রাজত্বকাল ১৩৫৩—১৩৮৪ শক (১৪৩১–১৪৬২ খৃঃ) স্থিরীকৃত হইতেছে । এই নিৰ্দ্ধারণ রাজমালার উক্তির সমর্থক বিধায় বিশুদ্ধ বলিয়া মনে করা যাইতে পারে ; এতদ্বারা মহারাজের বত্রিশ বৎসর রাজ্যভোগ করা এবং ১৩৮০ শকে বিদ্যমান থাকা,—এতদুভয় বাক্যের সামঞ্জস্য রক্ষা পাইতেছে। সুতরাং ধৰ্ম্মমাণিক্য ১৪৩১ হইতে ১৪৬২ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত রাজদণ্ড ধারণ করিয়াছিলেন, ইহাই প্রকৃত এবং বিশুদ্ধ নিৰ্দ্ধারণ বলিয়া গ্রহণ করিতে হইল । ধৰ্ম্মমাণিক্যের পরলোক গমনের পর, তাহার কনিষ্ঠ পুত্র প্রতাপমাণিক্য, asminum সেনাপতিগণের প্ররোচনায় জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ধস্তকে উল্লঙ্ঘন করিয়া, রাজত্বকাল । ১৩৮৫ শকে (১৪৬৩ খৃঃ) সিংহাসন লাভ করেন। পূর্ণ এক বৎসর কাল রাজত্ব করা তাহার ভাগ্যে ঘটে নাই ; রাজ্যলাভের অল্পকাল পরেই সেনাপতিগণ কর্তৃক নিহত হইয়াছিলেন । * প্রতাপমাণিক্যের পর তদীয় জ্যেষ্ঠ বৈমাত্রেয় ভ্রাতা ধন্যমাণিক্য সেনাপতিগণের seনশিকোন অনুকম্পায় সিংহাসন লাভ করিয়াছিলেন। রাজমালায় ইহার শাসনকাল । রাজ্যারোহণের বা রাজত্বকালের উল্লেখ না থাকিলেও আমুসঙ্গিক প্রমাণস্বারা তাহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য নহে। ইনি প্রতাপমাণিক্যের পরবর্তী রাজা । ১৩৮৫ শক (১৪৬৩ খৃঃ) অবসানের পূর্বেই প্রতাপের শাসনকাল অতিবাহিত হইবার কথা পূর্বে লিখিত হইয়াছে। সুতরাং মহারাজ ধন্য ১৩৮৫ শকে রাজ্যলাভ করিয়াছিলেন, ইহা পাওয়া যাইতেছে। ‘ত্রিপুর বংশাবলী পুথির বাক্যদ্বারাও এই নির্বাচন সমর্থিত হয়। উক্ত পুথিতে ধন্যমাণিক্য প্রসঙ্গে লিখিত আছে —“আষ্ট শ তিহত্তর সনে রাজত্ব পাইল।” ত্রৈপুরী ৮৭৩ সন ও পূর্বোক্ত ১৩৮৫ শক অভিন্ন ; a “মহাবলবস্ত দেখি দিনে না মারিছে । সেনাপতি সবে চক্রে রাত্রিতে বধিছে ॥” রাজমালা-২র লহর, ৬ পৃঃ ।