পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজমালী । { দ্বিতীয় 8 : כי পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সম্ভবতঃ এই সময় হইতেই দান গ্রহীতাগণের আচরণ সম্বন্ধে সন্দেহের উদ্রেক হইয়া থাকিবে। কাল প্রভাবে সর্বত্রই ক্রমশঃ তাম্রশাসনের প্রচলন একবারে রহিত করিতে হইয়াছে ; ইহাও সমাজের অবনতির ফল বলিয়াই মনে হয়। বৰ্ত্তমান সময়ে যে কোন নিদর্শনপত্র (দলিল ) সম্পাদনকালে সাক্ষী উপস্থিত রাখিয়া এবং রেজিস্টরী করাইয়াও অনেকস্থলে নিরাপদ হওয়া যায় না। অধিকাংশ দলিলের পেছনে বিবাদ বিষম্বাদ, মামলা মোকদ্দমা লাগিয়াই আছে। সুতরাং ইহা যে তাম্র-শাসন প্রচলিত রাখিবার যুগ নহে, এ কথা অতি সহজবোধ্য এবং লোক চরিত্রই সেই প্রথা রহিতের মুখ্য কারণ বলিয়া মনে হয়। আইনের মার পেচ, আর আইন ব্যবসায়ীর কূট বুদ্ধি এবম্বিধ পরিবর্তনের পথ প্রদর্শক বলিয়া বুঝা যাইতেছে। ত্রিপুরার তাম্র শাসনই এই আলোচনার মূলীভূত বিষয়। কিন্তু বর্তমানকালে অনেক শাসন দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় এবং আবিষ্কৃত অনেক শাসনের প্রতি আস্থা স্থাপন করিতে হৃদয়ে দ্বিধাভাব উপস্থিত হওয়ায়, বিষয়টা যথাযথ আলোচনার সুবিধা খঢ়িল না । সৈন্তাধ্যক্ষের উপাধি । ত্রিপুরার সামরিক বিভাগের প্রাচীন বিবরণ আলোচনায় জানা যায়, এই রাজ্যে সৈন্তাধ্যক্ষগণের উপাধি সময় সময় পরিবর্তিত হইয়াছে। মহারাজ ত্রিলোচনের পূর্বে ইহাদের কি উপাধি ছিল জানিবার সুবিধা নাই। তৎপরবর্তীকালের যে বিবরণ ংগ্রহ করা সম্ভব হইয়াছে, তাহা নিম্নে প্রদান করা গেল । সেনা | মহারাজ ত্রিলোচনের কিয়ৎকাল পূর্বব হইতে সৈন্তাধ্যক্ষগণের সেনা’ উপাধি anna as থাকিবার নিদর্শন পাওয়া যায়। নিম্ন শ্রেণীর যোদ্ধগণ সৈন্য’ উপাধি । এবং তাহদের অধ্যক্ষগণ ‘সেনা পদবী বাচ্য ছিল । ত্রিলোচনের শাসনকালেও এই প্রথা প্রচলিত থাকা জানা যাইতেছে। ইহার দুই একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া আবশ্যক । মহারাজ ত্ৰিলোচন ভূমিষ্ঠ হইবার সংবাদ শ্রবণে রাজ্যময় আনন্দ-কোলাহল উথিত হইয়াছিল । তৎকালে— “আনন্দ হৃদয় হৈল সৈন্ত সেনাগণ ॥ মনুষ্য শরীরে দেখে শোভা ত্রিনয়ন । পাত্র মন্ত্রী সৈন্ত সেনা সবে তুষ্ট মন ৷” প্রথম লহর, ত্রিপুর থও—১৭ পৃঃ ।