পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&>b" রাজমালা। 声 { দ্বিতীয় সময় ব্যতীত মায়ের কাছে যায় না। বাচ্চাট পালয়ত্রীর দৃষ্টির অন্তরালে গেলে, সে মায়ের মত ব্যস্তভাবে তাহাকে খুজিয়া বেড়ায়। ইহা ঠিক মানব সমাজের ধাবীর অনুরূপ কাৰ্য্য বলা যাইতে পারে। প্রত্যেক কুনকী আপন আপন বংশবল্লী লইয়া একত্রে থাকে। মানব সমাজ যেমন এক বাড়ীতে স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র গৃহে পরিবারস্থ পুত্র কন্যাদি লইয়া পৃথক পৃথক ভাবে বাস করে, ইহারাও তদ্রুপ এক দলের মধ্যেই আপন আপন সন্তান-সন্ততি লইয়া একটু স্বতন্ত্রভাবে থাকে। এই অবস্থা অতি সহজ দৃষ্টিতেই বুঝিয়া লওয়া যাইতে পারে। , হস্তীর প্রত্যেক দলে বিশ পচিশট হইতে, শতাধিক পৰ্য্যন্ত সংখ্যা দৃষ্ট হয়। দলের মধ্যে একাধিক দুষ্ট প্রকৃতির গুণ্ডা থাকিলে সৰ্ব্বদাই তাহদের পরস্পরে কলহ হয়। প্রতিদ্বন্ধীদ্বয়ের মধ্যে যে হস্তীটী অপেক্ষাকৃত দুর্বল, সে অনবরত মাইর খাইয়া দল পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হয়। এই শ্রেণীর বিতাড়িত কতিপয় গুণ্ড একত্রিত হইয়া এক একটী ক্ষুদ্র দল গঠন করে। স্থানীয় ভাষায় এই দলকে ‘ফাটুয়া দল’ বলে। হস্তী সমূহের উচ্চতানুসারে দেশভেদে নানাবিধ আখ্যা প্রদান করা হয়। ত্রিপুর রাজ্যে ইহার যেরূপ শ্রেণী বিভাগ করা হয়, তাহা নিম্নে প্রদত্ত হইল। পুং হস্তী সম্বন্ধে —দুগ্ধ পানের অবস্থা পৰ্য্যন্ত বাচ্চা’ বলা হয় । দুগ্ধ ছাড়িবার পর, ৭ ফুট পৰ্য্যন্ত উচ্চ হস্তী মিয়ানা’ এবং তদৃদ্ধ উচ্চতা বিশিষ্ট হস্তী ‘গুণ্ডা’ বা ‘দাতাল’ নামে অভিহিত হইয়া থাকে। পুং হস্তীর মধ্যে যে হস্তীর দস্তদ্বয় বাহির হয় না, তাহাকে 'মক্‌না’ বলে । হস্তিনী সম্বন্ধে —বাচ্চ অবস্থা উত্তীর্ণের পর ৭ ফুট পৰ্য্যন্ত উচ্চ হস্তিনী মিয়ানী এবং তদৃদ্ধ উচ্চ হস্তিনীকে ‘কুনকী বলে। সাধারণতঃ হস্তিনীগণ প্রথম গৰ্ত্তধারণ না করা পর্য্যন্ত মিয়ানী শ্রেণীভুক্ত। 卿 প্রাদেশীক প্রথানুসারে হস্তীর মস্তক, কর্ণ, চক্ষু, শুণ্ড, দস্ত, নখ ও পুচ্ছ ইত্যাদির লক্ষণানুসারে হস্তী শুভ কি অশুভ লক্ষণাক্রান্ত তাহা নির্ণয় করা হয়। প্রাচীন ঋষিগণও হস্তীর লক্ষণাদি সম্বন্ধে অনেক কথা বলিয়াছেন, অতঃপর তাহার ংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করা হইবে । হস্তীর দন্ত বিশেষ মূল্যবান এবং তদ্বারা নানাবিধ ৰিলাস দ্রব্য, খেলেন, উপবেশনের আসন এবং পাট নিৰ্ম্মিত হয়। ত্রিপুরা রাজ্যে গজদন্তদ্বারা অনেক বস্তু নিৰ্ম্মিত হইয়া থাকে। হস্তীর অস্থিও কাজে লাগে, কিন্তু তাহা দন্তের স্থায় মূল্যবান বা দীর্ঘকাল স্থায়ী নহে। ե ত্রিপুরার গজদন্তে একমাত্র রাজার অধিকার, তাহা অষ্ঠে গ্রহণ করিলে আইন অনুসারে দণ্ডাৰ্ছ হয়। এরূপ আইন প্রচলিত থাকা সত্ত্বেও অনেকে নীবিড় অরণ্য মধ্যে গোপনে হস্তী বধ করিয়া দন্ত চুরি করিতে কুষ্ঠিত হয় না। *