পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o রাজমালা । [ दिखैौत्र هوه কোন গ্রামে যেমন ত্রিনাথেরমেল, কিশোরী ভজন প্রভৃতি উপলক্ষে সম্প্রদায় গঠিত হইয়া থাকে, রামগতিও তক্রপ একটা দল গঠন করিয়াছিল, অবস্থা আলোচনায় ইহাই বুঝা যায়। রামগতির গুরুর নাম এবং ভজন-প্রণালীর বিষয় বৰ্ত্তমান কালের অগোচর। গুরুর আগমনোপলক্ষে রামগতির বাড়ীতে সমারোহ ব্যাপার ঘটিয়াছিল। তাহার পুরোহিত রাধাকান্ত ঠাকুরও এই উৎসবে যোগদান করিয়াছিলেন। তিনি প্রভুকে নিজের বাড়ীতে নেওয়ার কথাও কবিতায় পাওয়া যাইতেছে ; কিন্তু সে বাড়ীতে যাইয়া গুরু ঠাকুরের বসিবার স্থান হইল গো-শালায় ! এই উক্তি দ্বারা প্রভুর জাতি ও মর্যাদার প্রতি কটাক্ষ করা হইয়াছে বলিয়াই মনে হয় যাহা হউক, রামগতির ভক্তবৃন্দ প্রভুকে লইয়া ব্যতিব্যস্ত হইয়া উঠিল । তাহার পূজোপচার সংগ্ৰহ, যজ্ঞধুনী প্রজ্জ্বলন, সমস্তই হইল, তখন প্রভু বলিলেন—“আমাকে সতী, আনিয়া দাও, নতুবা আমি পাতালে প্রবেশ করিব।” o প্রভুর আজ্ঞা পালনের উপায় না দেখিয়া:ৰ্তাহার পাতাল প্রবেশের ভয়ে ভক্তবৃন্দের মধ্যে হাহাকার ধ্বনি উত্থিত হইল। তখন ধনীরাম পাটারী, সতী জানয়নের নিমিত্ত দৌড়িয়া ছুটিল। পাটারীগণ যে কোন শ্রেণীর জীব এবং নিম্ন সমাজে তাহদের আধিপত্য কত বেশী ছিল, তাহার বিস্তর নিদর্শন বর্তমান কালেও পাওয়া যায় ; তাহাদের অসাধ্য কাৰ্য্য ছিল না। এজস্যই ধনীরাম, সতী সংগ্ৰহ কার্য্যে সাহসের সহিত অগ্রসর হইয়া থাকিবে । ‘আয়নীরে পাইল ভূতে এই উক্তি দ্বারা এবং পরবর্তী বিবরণ দ্বারা বুঝা যায়, ধনীরাম এই আয়নীকেই ‘সতী'র সুদুল্লভ আসন প্রদান দ্বারা ধন্যা করিয়াছিল। m গুরুজী ভক্তগণের সেবায় সস্তুষ্ট হইয়া যাত্রাকালে বলিয়া গেলেন,—“আমি আবার আসিব ; কিন্তু তখন অন্যরূপধারণ করিয়া আবিভূত হইব । অন্তরঙ্গ ভক্ত ব্যতীত অন্য কেহ আমাকে চিনিতে পারিবে না।” l রামগতি কাঠুরিয়া ছিল। পার্বত্য অরণ্য হইতে প্রতিদিন কাষ্ঠ সংগ্ৰহ করিয়া লোকালয়ে বিক্রয় করত। সে একদিন কাষ্ঠভার বহন করিয়া ক্লাস্ত হওয়ায় বনের মধ্যে বিশ্রাম করিবার সময় উচ্চৈঃস্বরে ভগবানের নাম করিতেছিল। তৎকালে কোনও দুষ্ট লোক জঙ্গলের অন্তরাল হইতে ডাকিয়া বলিল,—“রামগতি, তোর দুঃখের অবসান হইয়াছে, তুই শীঘ্রই রাজা হইবি।” এই বাক্যকে রামগতি ভগবানের প্রত্যাদেশ বলিয়া মনে করিল এবং তাহার অন্তরঙ্গ ভক্ত গেীরা কামারের নিকট সমস্ত কথা বলিল। এই কৰ্ম্মকারের দ্বারা কথাটা সাধারণের মধ্যে প্রচারিত হইয়াছিল । এদিকে রামগতির দল ক্রমশঃ পুষ্ট হইয়া উঠিল, সঙ্গে সঙ্গে তাহার প্রভাবও বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। দেবতার প্রত্যাদেশমূলে অবস্থা এতদূর গড়াইল যে, রামগতির ভক্তেরা তাহাকে ‘রাজা রামগতি’ আখ্যা প্রদান করিল এবং বাঁশের দ্বার।