পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর } মধ্য-মণি । २१७ কুশের পুত্র কুশনাভ কর্তৃক এই নগরী স্থাপিত হইয়াছে। তৎপুত্র গাধি এই স্থানে রাজত্ব করিবার সময় হইতে স্থানের অপর নাম ‘গাধিপুর’ হইয়াছে। কন্যাকুঞ্জ নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে রামায়ণের তাদিক গু—৩২ ও ৩৩ সর্গে যে উপাখ্যান সন্নিবেশিত হইয়াছে, তাহার স্থূল মৰ্ম্ম এই ;— ঘৃতাটি অঙ্গরার গর্ভে রাজৰ্ষি কুশনাভের শত কন্যা উৎপন্ন হয়। পূর্ণ যৌবন সেই সকল আলৌকিক সৌন্দৰ্য্যশালিনী কন্যা একদা উদ্যান ভ্রমণকালে, বায়ুর দৃষ্টিগোচর হওয়ায়, তিনি বিমুগ্ধ চিত্তে সম্মুখীন হইয়া তাহাদিগকে পাইবার ইচ্ছ জানাইলেন । কন্যাগণ বলিলেন—“আমরা স্বাধীন নহি, আমাদের পিতা আছেন, তিনি র্যাহার হস্তে তাপণ করিবেন, তাহাকেই আমরা ভৰ্ত্ত বলিয়া স্বীকার করিব । , তাপনার প্রস্তাবে সম্মতিদানের অধিকার আমাদের নাই ।” বায়ু, কন্যাগণের কথায় ক্রুদ্ধ হইয়া, তাহাদের শরীরে প্রবেশপূর্বক সমস্ত অঙ্গ ভাঙ্গিয়া দিলেন। কন্যাগণ এই ঘটনায় কুজা হওয়ায়, স্থানের নাম ‘কস্যাকুঞ্জ’ হইয়াছে। পরে তাহাদের কুঞ্জত বিদূরিত হইয়াছিল । খৃঃ সপ্তদশ শতাব্দীতে চীন পরিব্রাজক হিউয়েন-সিয়াং এই স্থানে আগমন করিয়াছিলেন। তিনি স্থানের নামকরণ সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছেন, পূর্বোক্ত বিবরণের সহিত তাহার কিঞ্চিৎ পার্থক্য তাছে। র্তাহার মতে বায়ুর পরিবর্তে, মহাবৃক্ষ ঋষি কন্যাদিগকে লাভের প্রার্থী হইয়াছিলেন, এবং তাহার অভিসম্পাতে উহাদের কুক্ততা ঘটে । পশ্চাত্য ভৌগোলিক টলেমি এই স্থানকে কনেগিজ (Kanogiza) ও প্লিনি, কলিনিপক্ষ (Calinipaka) নামে অভিহিত করিয়াছেন। কুশবংশের রাজত্বের পরে এই প্রদেশে গুপ্তবংশের অভু্যদয় হয়। এই বংশের পর, প্রভাকর বর্দ্ধন হইতে হৰ্ষবৰ্দ্ধন (শিলাদিত্য) পৰ্য্যন্ত তিন জন রাজার নাম চীন পরিব্রাজকগণের ভ্রমণ বৃত্তাস্তে পাওয়া যায়। ইহার পর কুলচুরি ও পালবংশীয় রাজগণ এই স্থানে রাজত্ব করেন । ইহার দেবশক্তি বংশীয় নৃপতিগণ হইতে এই প্রদেশ হস্তগত করিয়াছিলেন। তৎপর চন্দ্র রাজগণের প্রাধান্ত হয় । এই বংশীয় জয়চন্দ্র বা জয়র্চাদই কনৌজের শেষ হিন্দুরাজা । আদিশূর যজ্ঞ সম্পাদনার্থ এই স্থান হইতে পঞ্চ গোত্রীয় সাগ্নিক ব্রাহ্মণ আনয়ন করিয়াছিলেন । কলমিগড় ;–(৭৩ পৃঃ—৭ পংক্তি )। এই স্থানে ত্রিপুরার সেনানিবাস ছিল । উদয়পুর হইতে খণ্ডল অভিমুখীন রাস্তার উপর এই দুর্গ থাকিবার প্রমাণ পাওয়া যায়। বৰ্ত্তমান সোণামুড়া সহরের দক্ষিণদিকে এক ক্রোশ অন্তরে ‘দুধ পুষ্করিণী' নামক একটা বৃহৎ দীর্ঘিকা আছে। এই দীঘির পশ্চিম পার্শ্বে বিস্তৃত স্থান জুড়িয়া ইষ্টক প্রাচীরের ভগ্নাবশেষ বিদ্যমান রহিয়াছে । ইহার পশ্চিম দক্ষিণ কোণে মৃণায় প্রাচীর ও পরিখা ছিল, তাহার চিন্তু এখনও বিলুপ্ত হয় নাই। এই স্থানে সেনানিবাস থাকিবার প্রবাদ সাধারণ্যে প্রচলিত আছে, কিন্তু এই গড়ের নাম কি ছিল, তাহা