পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর ] মধ্য-মণি । &b"> এই স্থলে তরপে স্থলে তার পরে’ লিখিত হইয়াছে, ইহা নিঃসঙ্কোচে বলা যাইতে পারে । তরপ বৰ্ত্তমানকালে শ্রীহট্ট জেলার একট পরগণায় পরিণত হইয়া থাকিলেও প্রাচীন কালে ইহা একটী সামন্ত রাজ্য ছিল। তরপের শেষ হিন্দু রাজার নাম আচক নারায়ণ। ইনি ত্রিপুরেশ্বরের আশ্রিত রাজা হইলেও অন্যান্য স্বাধীন ভূপতি অপেক্ষ তাহার প্রভাব কম ছিল না। আচক নারায়ণ সম্বন্ধে তরপের ইতিবৃত্তে পাওয়া যায় ;– “আচক নারায়ণ যে ত্রিপুরাধিপতির করদ কিম্বা সংস্কৃষ্ট ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই ; তৎকালে যিনি যে দেশের শাসনভার প্রাপ্ত হইতেন, তিনি সেই দেশের রাজা বলিয়া সাধারণের নিকট পরিচিত এবং খ্যাত হইতেন।” তরপের ইতিহাস—৩২ পৃঃ । তরপ রাজ্য নিতান্ত ক্ষুদ্র ছিল না। সরাইল, সতর খণ্ডল, জোয়ানশাহী প্রভৃতি পরগণ এই রাজ্যের অন্তর্নিবিষ্ট ছিল। তথাকার রাজা আচক নারায়ণ ধৰ্ম্মনিষ্ঠ, দয়ালু এবং প্রজাবৎসল ছিলেন। ইনি শ্ৰীহট্টের রাজা গৌরগোবিন্দের সমসাময়িক (খৃঃ ১৪ শ শতাব্দী) ব্যক্তি। সম্ভবতঃ মহারাজ রত্নমাণিক্য এই সময় ত্রিপুর সিংহাসনে সমারূঢ় ছিলেন। আচক নারায়ণের শাসনকালে পাঠানগণ শ্রীহট্টের উপর হস্তক্ষেপ করেন নাই। র্তাহার এলাকা মধ্যে কাজি মুরউদ্দীন নামক ব্যক্তি আপন পুত্রের বিবাহোপলক্ষে গো-হত্যা করায় রাজ আজ্ঞায় তাহার প্রাণদণ্ড হয়। মুরউদ্দীনের ভ্রাতা হেলিমউদ্দীন ইহার প্রতিকার প্রার্থী হইয়া দিল্লীর সম্রাট সদনে অভিযোগ উপস্থিত করায়, শ্রীহট্টে মুসলমান শাসন প্রবর্তনের অভিপ্রায়ে দিল্লী হইতে সৈয়দ নসিরউদ্দীনকে সসৈন্তে প্রেরণ করা হয়। তিনি প্রথমতঃ শ্ৰীহট্টের রাজা গৌরগোবিন্দের ধবংস সাধনে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছিলেন, কিন্তু দীর্ঘকাল অকৃতকাৰ্য্য হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র তীরে শিবির স্থাপন করিয়া সুযোগ প্রতীক্ষা করিতেছিলেন । কিয়ৎকাল পরে শাহ জালাল নামক জনৈক সাধক ব্যক্তির সাহায্যে গৌরগোবিন্দকে পরাস্ত করিয়া, তরপ আক্রমণের নিমিত্ত যাত্রা করিলেন। রাজা আচক নারায়ণ ভীত ও সন্ত্রস্ত হৃদয়ে সপরিবারে ত্রিপুরেশ্বরের আশ্রয় প্রার্থনা করিলেন। ত্রিপুরাধিপতি র্তাহাকে আশ্রয় প্রদান করিয়াছিলেন, কিন্তু র্তাহার রাজ্যোদ্ধারের চেষ্টা করিলেন না। আচক নারায়ণ হতাশ হৃদয়ে মথুরা যাত্রা করিলেন, সেখানেই তাহার মানবলীলা শেষ হইয়াছিল। তদবধি তরপ দেশ মুসলমানের কুক্ষিগত হইয়াছে। তিষণ –(৩৯ পৃঃ—১১ পংক্তি) । ইহা ত্রিপুরেশ্বরের জমিদারী চাকলে রোশনাবাদের একটী সুবৃহৎ পরগণা ; চৌদ্দগ্রাম পরগণার সংলগ্ন দক্ষিণ পার্থে অবস্থিত। কুমিল্লা হইতে যে সুদীর্ঘ রাজবক্স চট্টগ্রাম পৰ্য্যন্ত গিয়াছে, তাহ। এই