পাতা:শ্রীরাজমালা (প্রথম লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8b" রাজমালা [ প্রথম এই সিংহাসনের কথা আলোচনা করিতে যাইয়া আমাদের আর একটী কথা মনে পড়িতেছে। সিংহাসন-দাতা মহারাজ গোবিন্দ মাণিক্য রাজ্যভ্রষ্ট অবস্থায় কিয়ৎকাল আরাকান রাজের আশ্রয়ে ছিলেন। সেই স্থান হইতে প্রত্যাবর্তন কালে, আরাকানের মঘনৃপতি, গোবিন্দ মাণিক্যকে যে সকল বিদায় উপটৌকন প্রদান করিয়াছিলেন, তন্মধ্যে পাওয়া যায়,— खयाँब्लॉकॉन ब्रांrछब्र প্রদত্ত সিংহাসন । “কতঘর মধ, অষ্টধাতু সিংহাসন। দেবজন্যে মঘরাজ করিল অর্পণ ॥” রাজমালা—গোবিন্দ মাণিক্য থ গু । আরাকান রাজের প্রদত্ত সিংহাসন কোথায় কি অবস্থায় আছে, বর্তমানকালে তাহা নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। ত্রিপুরার অন্য কোন দেবালয়ে আরাকানপতির দত্ত সিংহাসন, অথবা অষ্টধাতু নিৰ্ম্মিত সিংহাসন আছে, এমন জানা যায় না। চতুর্দশ দেবতার সম্মুখে দণ্ডায়মান হইয়। অতীত ঘটনাবলী স্মরণ করিলে হৃদয়ে স্বতঃই যেন কি এক বিভীষিকা মিশ্রিত ভক্তি রসের সঞ্চার হয় । যে গ্র্যিকে পঞ্চ সহস্ৰ সকাল যাবত হিন্দু, মুসলমান ও কিরাত প্রভৃতি বিবিধ শ্রেণীর কোট কোট আর্য ও অনার্য্য ধৰ্ম্মপ্রাণ ভক্ত অর্চনা ও ভক্তিকরিয আসিতেছে, সেই বিগ্রহের গৌরব বা গাম্ভীৰ্য্য কম নহে, একথা অতি সহজ বোধ । ত্রিপুর রাজবংশের অন্যান্ত কুলদেবতা, (৬বৃন্দাবনচন্দ্র, ভুবনমোহন, লক্ষমা নারায়ণ প্রভৃতি বিগ্রহ) সম্প্রদায় বিশেষের উপাস্য । চতুর্দশ দেবতা বিভিন্ন সম্প্র: দায়ের উপাস্য চৌদ্দটী দেবতার সমষ্টি বিধায়, তৎপ্রতি সকল সম্প্রদায়েরই শ্রদ্ধা ও ভক্তি আকৃষ্ট হইয়াছে। কত পরাক্রমশালী বীরের উত্তপ্ত শোণিতে দেব-মন্দির প্রক্ষালিত হইয়াছে, কতকোট নর ও পশ্বাদির জীবন এই দেবদ্বারে আহুতি প্রদান করা হইয়াছে, তাহার সংখ্যা কে করিবে ? এই সকল কথা ভাবিতে গেলে, হৃদয়ে বিষম বিভীষিকার ছায়াপাত হয়। বর্তমানকালে নরবলি বাদ পড়িয়া থাকিলেও প্রতিবৎসর অসংখ্য পশু-বলি দ্বারা দেবতার অর্চন চলিতেছে। অসংখ্য হংস এবং পারাবতও বলি দেওয়া হয়। এই সকল বলি কামরূপ প্রদেশে যে ব্যবস্থেয়, পূর্ববর্তী ২৯ পৃষ্ঠার পাদটীকায় তাহ বর্ণন করা হইয়াছে ; এস্থলে পুনরুল্লেখ নিম্প্রয়োজন। কালিকাপুরাণের ৫৫ অধ্যায়েও পক্ষী বলিদানের ব্যবস্থা পাওয়া যায়।