পাতা:শ্রীশ্রীগৌরসুন্দর - শ্যামলাল গোস্বামি.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अ–िऔला dł আর একদিন প্ৰভু শ্ৰীবাস পণ্ডিতকে বলিলেন, “পণ্ডিত, পূর্বে তোমার জীবনান্ত সময় উপস্থিত হইলে, আমি তোমার জীবন রক্ষা করিয়াছিলাম, স্মরণ হয় কি ?” শ্ৰীবাস পণ্ডিত বলিলেন, “প্রভো, কালকবলে পতিত হইতেছিলাম, কোনরূপে হঠাৎ রক্ষা পাইয়াছি, ইহা আমার স্মরণ আছে। আপনার অবতারের পূর্বে আমি অতিশয় দুৰ্দান্তস্বভাব ছিলাম, স্বপ্নেও কখন ভগবদ গুণনামাদি শ্রবণ কীৰ্ত্তন করিতাম না। দৈবাৎ কোন মহাত্মা আমাতে স্বপ্নাবস্থায় দর্শন দান করিয়া বলিলেন, “ওরে ব্ৰাহ্মণাধম, তুই যেরূপ দুৰ্দান্ত, তোকে উপদেশ দেওয়া উচিত নয়, তথাপি বলিতেছি, তোর এক বৎসর মাত্র পরমায়ু আছে, এখনও সাবধান হইয়া কাৰ্য্য কর।” রজনী প্ৰভাত হইলে, ঐ স্বপ্নোপদেশ আমার স্মৃতিপথে আরূঢ় হইল। আমি মরণভয়ে অতিশয় উৎকণ্ঠিত হইয়া নারদীয়পুরাণ পাঠ করিতে করিতে “হিরোনাম হরেনাম হরেন।ামৈব কেবলম। কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেৰ গতিরন্যথা৷” এই শ্লোকটি প্ৰাপ্ত হইলাম। অনন্তর এই শ্লোকটিকেই শ্ৰীহরির উপদেশ বিবেচনা করিয়া হরিনামের শরণ গ্ৰহণ করিলাম। এইভাবে কথিত মরণদিন নিকটবৰ্ত্তী হইলে, দেবানন্দ পণ্ডিতের বাটীতে শ্ৰীভাগবত শ্রবণার্থ গমন করিলাম। পরে যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা আপনিই বিদিত আছেন।” আর একদিন প্ৰভু শ্ৰীবাসের আবাসে ভগবন্মন্দির প্রদক্ষিণ করিতেছিলেন, এমন সময়ে সেই মন্দিরের দক্ষিণভাগে সুচিকৰ্ম্মজীবী এক যবন সুইচের কাজ করিতে করিতে র্তাহার নিরুপম মাধুরী অবলোকন করিয়া মহানন্দে নিমগ্ন হইল। পরে প্রীতি-প্ৰফুল্ল-নয়নে হস্ত করিতে করিতে “কি আশ্চৰ্য্য দেখিলাম, কি আশ্চৰ্য্য দেখিলাম” বলিতে লাগিল । বলিতে বলিতেই আনন্দাশ্রীপরিব্যাপ্ত হইয়া সৌচিক কৰ্ম্ম ত্যাগ পূর্বক উৰ্দ্ধবাহু হইয়া নৃত্য করিতে আরম্ভ করিল। তদবধি সে সংসার ত্যাগ করিয়া অবধূতের ন্যায় বিচরণ করিতে লাগিল । আর একদিন শ্ৰীগৌরাঙ্গ প্ৰেমানন্দে বিবশি হইয়া আচাৰ্য্যরত্বের ভবন হইতে নৃত্য করিতে করিতে আগমন করিতেছিলেন। পথিমধ্যে এক কুষ্টী বিপ্ৰ তীহার চরণে শরণা লইলেন। তিনি করুণান্দ্রি হইয়া ঐ বিপ্ৰকে অদ্বৈতাচাৰ্য্যের পাদোদক গ্ৰহণ করিতে বলিলেন । তাহাতেই তঁহার রোগের শান্তিয় সহিত ভাবরোগেরও শান্তি হইল ।