পাতা:শ্রীশ্রীগৌরসুন্দর - শ্যামলাল গোস্বামি.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अति-क्रौली >Q বুঝিতেন না। সাধারণ লোক বাহ পূজাকেই ধৰ্ম্ম জানিতেন। অধ্যাপকসকল নামে শাস্ত্ৰজ্ঞ ও ধাৰ্ম্মিক, কাৰ্য্যতঃ অজ্ঞ ও নাস্তিক হইয়াছিলেন। সন্ন্যাসিগণ মূৰ্ত্তিধর দম্ভম্বরূপ হইয়াছিলেন। প্রকৃতশাস্ত্ৰজ্ঞ ও প্রকৃতধাৰ্ম্মিকের আদর ছিল না, বরং তঁহার জনসমাজে ঘুণিত হইতেন। দেখিয়া শুনিয়া ভক্তগণ বিষাদে বিবিক্তিসেবী হইয়াছিলেন। সময়ে, সময়ে দুই চারি জন অন্তরঙ্গ একত্র মিলিত হইয়া গোপনে জগতের দুৰ্গতির বিষয় আলোচনা করিতেন । শ্ৰীহট্ট প্রদেশের অন্তর্গত নবগ্রাম নামক স্থানের অধিপতি রাজা দিব্যাসিংহের মন্ত্রিতনয় অদ্বৈতাচাৰ্য্য র্তাহাদিগের নেতা ছিলেন। তিনি বিষ্ণুভক্তিপরায়ণ ও তাপস ছিলেন। অদ্বৈতাচাৰ্য্য আপনাদিগের পূর্ববাস শ্ৰীহট্ট পরিত্যাগ পূর্বক গঙ্গাতীরবত্তী শান্তিপুরে আসিয়া বাস করিয়াছিলেন। বাসস্থান শান্তিপুরে হইলেও, তাহার শ্ৰীনবদ্বীপে একটি সামান্য আবাস ছিল । নবদ্বীপস্থ ভক্তবৃন্দ ঐ স্থানেই সময়ে সময়ে সমবেত হইয়া ভক্তিশাস্ত্ৰাদির আলোচনী ও লোকের দুৰ্গতির বিষয় চিন্তা করিতেন। আমাদিগের বর্ণনীয় মহাপুরুষ শ্ৰীগৌরসুন্দরের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বিশ্বরূপও অনেক সময় ঐ স্থানেই অতিবাহিত করিতেন । তৎকালে তান্ত্রিক বীরাচারের প্রভাব জনসাধারণের উপর আধিপত্য বিস্তাৱ করিতে আরম্ভ করিয়াছিল । উহা ক্ৰমে ক্রমে সমগ্ৰ ভারতবাসীকেই আক্রমণ করিবার উপক্ৰম করিতেছিল । উহা পঞ্চ উপাসকসম্প্রদায়ের মধ্যেই প্ৰবেশ করিয়াছিল। গৃহী ও সন্ন্যাসী প্ৰভৃতি সকল সম্প্রদায়ের লোকই উক্ত তান্ত্রিক বীরাচারের পক্ষপাতী হইয়া উঠিয়াছিলেন। দুই একজন বিশুদ্ধ অকিঞ্চন ভগবদভক্তমাত্র উক্ত ব্যভিচারস্রোত লক্ষ্য করিয়া বিষাদিত হইতেছিলেন । ঠিক এই সময়ে বীরাচারী পাষণ্ডদিগের অত্যাচারে শ্ৰীবাসপণ্ডিতের শ্ৰীনবদ্বীপে বাস করা নিতান্ত ভার হইয়া উঠে । এই কথা শ্ৰীঅদ্বৈতাচাৰ্য্যের শ্রবণগোচর হয়। তিনি স্বভাবতঃ অতিশয় উচ্চহৃদয় ছিলেন। তঁহার অন্তঃকরণ সাধারণ লোকের ন্যায় ছিল না । তিনি তাৎকালিক জীবের দুৰ্গতি, পণ্ডিতকুলের নাস্তিকতা ও জনসাধারণের আচারব্যবহার দর্শন করিয়া অতিশয় ব্যথিত হইয়াছিলেন। পরমসাধু শ্ৰীবাসপণ্ডিতের প্রতি অসাধু পাষণ্ডসকলের অত্যাচার তঁহার সহ হইল না। অদ্বৈতাচাৰ্য্য লোকপরম্পরায় ঐ কথা শুনিয়া ক্ৰোধে অগ্নির ন্যায় জ্বলিয়া উঠিলেন। তখনই শ্ৰীবাস পণ্ডিতকে ডাকাইয়া আনিলেন, এবং বলিলেন, “পণ্ডিত, তুমি নদীয়া ত্যাগ করিও না ; পাষণ্ডগণ হইতে আর ভয় নাই ; অচিরেই ভগবান অবতরণ করিয়া পাষণ্ডকুলের দলনপূর্বক লোকসকলের উদ্ধারসাধন করিবেন। ;