পাতা:শ্রীশ্রীগৌরসুন্দর - শ্যামলাল গোস্বামি.pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

80 শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গুন্দর রামকেলিতে অবস্থান করিতে ইচ্ছা করিলেন না। পরদিন প্ৰভাতে উঠিয়াই যাত্ৰা করিলেন। লোকসকল সঙ্গে সঙ্গেই চলিল। প্ৰভু কানাইর নাট্যশালা যাইয়াই ফিরিবার অভিপ্ৰায় প্ৰকাশ করিলেন । স্বেচ্ছাময় প্রভুর ইচ্ছা রোধ করে, কাহার সাধ্য ? যেমন ইচ্ছা হইল, শ্ৰীবৃন্দাবন যাইবেন না, নীলাচলেই প্ৰত্যাগমন করিবেন, অমনি পূৰ্বমুখ হইলেন। কয়েক দিবসের মধ্যেই পুনর্বার শান্তিপুরে আগমন করিলেন। প্ৰভু শান্তিপুরে ফিরিয়া আসিয়াছেন শুনিয়া গঙ্গাদাস পণ্ডিত শচীদেবীকে লইয়া অদ্বৈতভবনে আগমন করিলেন। প্ৰভু জননীকে দেখিয়া ভক্তিভরে। প্ৰণাম ও প্ৰদক্ষিণ করিলেন। শচীদেবী পুত্ৰকে ক্রেগড়ে লইয়া অশ্রুধারা দ্বারা অভিষিক্ত করিতে লাগিলেন। অদ্বৈতাচাৰ্য্য প্ৰভুকে পাইয়া মাধবেন্দ্রপুরীর উৎসব উপলক্ষে মহামহোৎসবের আয়োজন করিয়া লইলেন। শচীদেবী স্বহস্তে প্ৰভুকে ভিক্ষা করাইবার অভিপ্ৰায় প্ৰকাশ করিলে, প্ৰভু তাহাতেই সম্মত হইলেন। দশদিন পৰ্য্যন্ত কীৰ্ত্তনানন্দের পরিসীমা রহিল না। যিনি কখন প্রভুকে দেখেন নাই বা যিনি দেখিয়াছেন উভয়বিধ ভক্তের সমাগমে শান্তিপুর লোকে লোকারণ্য হইল। রঘুনাথ দাস আসিয়া প্রভুর চরণে পতিত হইয়া তঁহার সহিত নীলাচলে যাইবার অভিপ্ৰায় জানাইলেন । রঘুনাথ দাস হুগলি জেলার অন্তৰ্গত সপ্তগ্রামে হিরণ্যাদাস ও গোবৰ্দ্ধন দাস নামে দুইজন মহাসন্ত্রান্ত লোক বাস করিতেন। তাঁহারা দুই সহােদর, জাতিতে কায় স্ত, উপাধি মজুমদার। র্তাহারা সপ্তগ্রামের জমিদার ছিলেন। ঐ জমীদারী পূর্বে একজন মুসলমানের ছিল ; পরে কোন সুত্রে তাঁহাদের হস্তগত হয়। ঐ জমীদারীতে বিংশতিলক্ষ টাকা আদায় হইত। তঁহারা আট লক্ষ গৌড়েশ্বরকে দিতেন এবং বার লক্ষ আপনারা ভোগ করিতেন। তাহারা দুই ভাই সদাচারী, ধাৰ্ম্মিক ও বদ্যান্য ছিলেন। নবদ্বীপের পণ্ডিতমণ্ডলীকে বিশেষরূপ অর্থসাহায্য করিতেন। নীলাম্বর চক্ৰবৰ্ত্তীর বিশেষ আনুগত্য করিতেন। হিরণ্যাদাস জ্যেষ্ঠ, গোবৰ্দ্ধনদাস কনিষ্ঠ। রঘুনাথ দাস কনিষ্ঠ গোবৰ্দ্ধনদাসের পুত্র। ১৪২০ শকে ইহঁর জন্ম হয়। রঘুনাথ দাস বাল্যকাল হইতেই দেবদ্বিজে ভক্তিপরায়ণ ছিলেন । তিনি আপনাদিগের পুরোহিত বলরাম আচাৰ্য্যের গৃহে অধ্যয়ন করিতেন।