পাতা:শ্রীশ্রীগৌরসুন্দর - শ্যামলাল গোস্বামি.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ\Ն শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গুন্দর উদ্ধার সাধন করিব।” প্রভুর কথা শুনিয়া শ্ৰীবাসপণ্ডিত প্রেমে পুলকিত হইয়া তঁহাকে পুনঃ পুনঃ নমস্কার সহকারে স্তব করিতে লাগিলেন। প্ৰভু তখন সদয় হইয়া বলিলেন, “তোর স্ত্রীপুত্ৰাদি সকলকে আনিয়া আমাকে দর্শন করা এবং সস্ত্রীক হইয়া আমার পূজা কর।” শ্ৰীবাসপণ্ডিত প্ৰভুর আজ্ঞানুসারে বাটীর সকলকে ডাকিয়া প্রভুকে দর্শন করাইলেন। পরীক্ষণেই সস্ত্রীক ভক্তিভরে প্রভুর পূজায় প্ৰবৃত্ত হইলেন। পূজা সমাধা হইলে, সপরিবারে প্রভুর চরণে প্ৰণাম করিলেন। প্রভুও সকলকেই “আমাতে চিত্ত হউক” বলিয়া আশীৰ্বাদ করিলেন। অনন্তর প্রভু সম্মুখে শ্ৰীবাসের ভ্রাতৃসুতা নারায়ণীকে দেখিয়া বলিলেন, “নারায়ণি, কৃষ্ণ বলিয়া কঁদ।” বালিকা নারায়ণী প্ৰভুর আদেশমাত্র “হা কৃষ্ণ” বলিয়া অচেতন অবস্থায় ধরাতলে পতিত হইলেন। নারায়ণীর নেত্ৰনীরে পৃথিবী পঙ্কিলা হইতে লাগিলেন । পরিশেষে শ্ৰীগৌরাঙ্গ শ্ৰীবাসপণ্ডিতকে বলিলেন, “দেখ শ্ৰীবাস, এই সকল বৃত্তান্ত কাহারও নিকট প্ৰকাশ করিও না।” এই কথা বলিয়াই প্ৰভু গৃহে গমন করিলেন। শ্ৰীবাসপণ্ডিত সপরিবারে প্রভুর অলৌকিক প্ৰকাশ দর্শন করিয়া বিস্মিত ও আশ্বস্ত হইলেন। সঙ্গে সঙ্গে রাজদণ্ডের ভয়ও কিয়ৎপরিমাণে অপগত হইল । অনন্তর একদা শ্ৰীগৌরাঙ্গ মুরারিগুপ্তের ভবনে যাইয়া “বরাহ বরাহ’ বলিতে বলিতে অকস্মাৎ নিজের বরাহমূৰ্ত্তি প্ৰকট করিলেন। সেই অপূর্ব বরাহমূৰ্ত্তি সন্দর্শন করিয়া মুরারিগুপ্ত ভয়ে ও বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইলেন। পরে তিনি কথঞ্চিৎ প্ৰকৃতিস্থ হইয়া সেই অদ্ভুত যজ্ঞবরাহের স্তব করিতে আরম্ভ করিলেন। মুরারির স্তব শেষ হইলে, শ্ৰীগৌরাঙ্গ তঁহাকেও শ্ৰীবাসপণ্ডিতের ন্যায় আশ্বাসপ্ৰদানসহকারে র্তাহার সেই অদ্ভুত প্ৰকাশবৃত্তান্ত প্ৰকাশ করিতে নিষেধ করিয়া নিজভবনে প্ৰত্যাগমন করিলেন । শ্ৰীগৌরাঙ্গ এইরূপ আরও কোন কোন ভক্তের গৃহে যাইয়া আরও কোন কোন মূৰ্ত্তি প্ৰকাশ করিলেন। তঁহার এই সকল আশ্চৰ্য্য ঐশ্বৰ্য্যের প্রকাশ দর্শনে সমাশ্বস্ত হইয়া ভক্তগণ পুনৰ্বার নির্ভয়ে সঙ্কীৰ্ত্তনে যোগদান করিলে লাগিলেন। আর কেহই পাষণ্ডীর বা রাজশাসনের ভয়কে অন্তরেও স্থান দিলেন না। ক্রমে পথে ঘাটে সকল স্থানেই উচ্চসঙ্কীৰ্ত্তন আরম্ভ হইল। নদীয়ায় যখন এইরূপ সঙ্কীৰ্ত্তন আরম্ভ হইল, তখন শ্ৰীনিতানন্দ নিজ প্রভুর প্রকাশপ্ৰতীক্ষায় শ্ৰীবৃন্দাবনে তুন্নবস্থান করিতেছিলেন। তিনি শ্ৰীবৃন্দাবনে থাকিয়াই প্রভুর প্রকাশ বিদিত হইলেন। বিদিত হইয়াই শ্ৰীবৃন্দাবন ত্যাগ করিলেন। পথে কোন স্থানেই