পাতা:শ্রীশ্রীগৌরসুন্দর - শ্যামলাল গোস্বামি.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-8 শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গুন্দর নিত্যানন্দকে দেখিয়া শ্ৰীগৌরাঙ্গ মদন মনোহরমূৰ্ত্তিতে তাহার সম্মুখে যাইয়া দাড়াইলেন । নিত্যানন্দ ও শ্ৰীগৌরাঙ্গকে দেখিলেন। তিনি তঁহাকে দেখিয়াই আপনার ঈশ্বর বলিয়া চিনিলেন। চিনিয়াও কোন কথাই বলিলেন না, স্তিমিত নয়নে প্ৰাণসখাকে দেখিতে লাগিলেন। শ্ৰীগৌরাঙ্গের সঙ্গিগণ উভয়ের ভাবগতি প্রত্যক্ষ করিয়া বিস্মিত হইলেন। শ্ৰীগৌরাঙ্গ আপনার সঙ্গিগণকে নিত্যানন্দের পরিচয় প্ৰদান করিবেন মনে করিয়া শ্ৰীবাসপণ্ডিতকে একটি শ্ৰীভাগবতের শ্লোক পাঠ করিবার নিমিত্ত ইঙ্গিত করিলেন। প্রভুর ইঙ্গিত পাইয়া শ্ৰীবাসপণ্ডিত নিম্নলিখিত দশমাস্কন্ধের শ্লোকটি পাঠ করিলেন । “বৰ্হপীড়ং নটবরবপুঃ কর্ণয়োঃ কণিকারং বিভ্ৰদবাসঃ কনক কপিশং বৈজয়ন্তীঞ্চ মালাম। রন্ধন বেণোরধর সুধিয়া পূরয়ন গোপবৃন্দৈবৃন্দারণ্যং স্বপন্দরমণং প্ৰাবিশদ গীতকীৰ্ত্তিঃ ॥” * ভাঃ ১০|২১৫ শ্লাক শ্রবণমাত্র নিত্যানন্দ মূচ্ছিত হইয়া ভূমিতলে পতিত হইলেন। শ্ৰীগৌরাঙ্গ শ্ৰীবাসপণ্ডিতকে পুনর্বার শ্লোক পাঠ করিতে বলিলেন। শ্লোক শুনিতে শুনিতে নিত্যানন্দের চৈতন্য হইল। তিনি সংজ্ঞা লাভ করিয়া আনন্দে হুঙ্কার করিয়া নৃত্য করিতে আরম্ভ করিলেন। কখন নাচেন, কখন কঁদেন, কখন হাসেন, কখন লাফান, কখন ভূতলে পড়িয়া গড়াগড়ি যান। তঁহার সেই অদৃষ্টপূর্ব উন্মাদাভােব অবলোকন করিয়া সকলেই স্তম্ভিত হইলেন। তঁহাকে ধরিয়া স্থির করিতে কাহারও সাহস হইল না । শেষে শ্ৰীগৌরাঙ্গ স্বয়ং যাইয়া শ্ৰীনিতানন্দকে ধরিলেন । তিনি যাইয়া ধরিবামাত্ৰ শ্ৰীনিত্যানন্দ তাহার শ্ৰী অঙ্গে মস্তক রাখিয়া নিস্পন্দ হইলেন। উভয়ের নয়নের ধারায় উভয়ের অঙ্গ প্লাবিত হইতে লাগিল । ক্রমশঃ যখন নিত্যানন্দ প্রকৃতিস্থ হইলেন, তখন শ্ৰীগৌরাঙ্গ বলিলেন, “আজি আমার শুভদিন, আপনার দর্শন লাভ করিলাম। আপনার অদ্ভুত ভক্তিযোগ দেখিয়া আমরা কৃতাৰ্থ হইলাম। আপনার কোন স্থান হইতে শুভাগমন হইল, আমরা শুনিতে পারি কি ?” নিত্যানন্দ বলিলেন,-“আমি

  • ময়ূরপুচ্ছ রঞ্জিত শিরোভূষণ, নটরসদৃশবপু, কর্ণযুগলে পীতবর্ণ উৎপলাকারপুষ্প, সুবর্ণের ন্যায় পীতবসন ও পঞ্চবর্ণ পুষ্পগ্রথিত বৈজয়ন্তী মালাশোভিত, বয়স্তগোপবৃন্দকর্তৃক গীতকীৰ্ত্তি ዛዟফঞ্চ অধর সুয়াদ্বারা রেণুর রন্ধ সকল পূরণ করিতে করিতে স্বীয় চরণচিহ্নদ্বারা রমণীয় শ্ৰীবৃন্দাবনে প্রবেশ করিতেছেন।