পাতা:শ্রীশ্রীচৈতন্যভাগবত - বৃন্দাবন দাস ঠাকুর .pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্তখিণ্ডের কথাসার (ዓ) পড়য়াকে তাড়না করিলেন। এই ঘটনাবলম্বনে মহাপ্ৰভু সন্ন্যাসগ্রহণেব ইচ্ছ। প্রকা ণ করিলেন এবং নিভৃতে। নিত্যানন্দের সহিত পরামর্শ করিলেন। গৌরহরি এই কথা ক্ৰমে মুকুন্দ ও গদাধরের নিকটও প্রকাশ করিলে সকলেই অন্তরে অন্তরে অত্যন্ত ব্যথা পাইলেন। সপ্তবিংশে-মহা প্রভুর সন্ন্যাস-গ্ৰহণেৰ কথা শুনিয়া ভক্তগণ ভাবিবিরহজুখে অতীব কাতর হইয়া পড়িলে মহাপ্ৰভু সকলকে আশ্বস্ত করিয়া বলিলেন যে—“নামা” ও “আর্চা” রূপে তেঁাহাব আরও দুই অবতার আছে, এবং তঁাহারা সকলেই সকল অবতারেই মহাপ্রভুর নিত্যসঙ্গী। ভাবিশোকে মিয়মাণা জননীকেও তিনি এইরূপ প্ৰবোধ দিলেন। অষ্টাবিংশে-শ্ৰীগৌরহরি। আগামী উত্তরায়ণ সংক্রান্তি-দিবসে কাটোয়ায় কেশব ভারতীর নিকট সন্ন্যাস-গ্রহণের অভিপ্ৰায় গোপনে নিত্যানন্দকে জানাইলেন, এবং জননী প্রমুখ পাঁচজনকে মাত্র তাহা জানাইতে বলিলেন । গৃহত্যাগের পূর্বদিন সকলের সঙ্গে কীৰ্ত্তনানন্দে দিন অতিবাহিত করলেন। সন্ধ্যায় সকলে মালচন্দন হস্তে মহা প্রভুকে দণ্ডবৎ করিতে আসিলে, মহাপ্ৰভু সকলকে নিজ গলার মালা প্ৰদান পূর্বক সৰ্ব্বক্ষণ কৃষ্ণকীৰ্ত্তনের উপদেশ করিলেন । সৰ্ব্বশেষে শ্ৰীধর এক লাউ হাতে করিয়া এবং আর এক ভাগ্যবান দুগ্ধভেট লইয়া উপস্থিত হইলেন। শচীদেবী দুগ্ধলাউ পাক কারলে মহাপ্ৰভু ভোজন করিলেন। চারিদণ্ড রাত্রি অবশেষ থাকিতে মহাপ্ৰভু উঠিয়া জননীকে নানা প্ৰবোধ দিলেন এবং নীরবে অঝোরে ক্ৰন্দনরতা জড়প্রায় জননীর চরণাধুলি শিরে ধারণ করিয়া জগজ্জীবের উদ্ধারার্থ নিজ জনগণকে কঁদ ইয়া গৃহ হইতে নিস্তফ্রান্ত হইলেন । অন্ত্যখণ্ডের কথাসার অস্ত্যখণ্ডে ভগবান শ্ৰীগৌরহরির সন্ন্যাসিরূপে দিব্যোন্মাদময় নাম-প্রচার-প্রধান-লীলা বর্ণিত হইয়াছেন। প্ৰথম অধ্যায়ে-শ্ৰীগৌরহরি ভারতীর নিকট হইতে সন্ন্যাস গ্ৰহণ-লীলা প্ৰকাশপূর্বক সেই রাত্রি কীৰ্ত্তন-নৃত্যুকালে আলিঙ্গন-দানে প্রেমসঞ্চার করিয়া ভারতীকে কৃপা করিলেন। পরদিন গুরুদেবকে অগ্ৰণী করিয়া শ্ৰীগৌরহরি কৃষ্ণানুসন্ধানলীলা প্ৰকাশার্গ পশ্চিমাভিমুখে যাত্ৰা করিয়া রাঢ়দেশে প্রবিষ্ট হইলেন। তৃতীয় দিবসে তাহার নীলাচল-গমনের সঙ্কল্প এবং অদ্বৈতমন্দিরে সকলের সহিত সাক্ষাৎ করিবার ইচ্ছা জ্ঞাপনার্থ শ্ৰীনিত্যানন্দকে নবদ্বীপে প্রেরণ করিয়া মহাপ্ৰভু ঠাকুর হরিদাসের ফুলিয়ায় যাত্ৰা করিলেন। ফুলিয়া হইতে অদ্বৈত-গৃহে যাইয়া নবদ্বীপ হইতে নিত্যানন্দ-সঙ্গে সমাগত শ্ৰীবাসাদি ভক্তগণ সহিত মিলিত হইয়া তথায় মহানৃত্য-কীৰ্ত্তিনোৎসব প্ৰকট করিলেন এবং বিষ্ণুখট্রায় বসিয়া স্বমুখে নিজ তত্ত্ব সকল প্রকাশ করিতে লাগিলেন। দ্বিতীয়ে-একদিন প্ৰাতঃকালে মহাপ্ৰভু নিত্যানন্দ-গদাধর।াদিসহ নীলাচল যাত্রা করিলেন এবং তঁহার বিরহকাতর ভক্তগণকে কৃষ্ণভজনের উপদেশ দিয়া সান্তন প্ৰদান করিলেন। তিনি আঠিসারা ও ছত্রভোগ গ্রাম। ধন্য এবং ছন্নভোগে রামচন্দ্রখানকে কৃপা করিয়া ক্ৰমে সুবর্ণরেখা, জলেশ্বর, রেমুণা, যাজপুর, বৈতরণী, কটক, সাক্ষিগোপাল, ভুবনেশ্বর, কমলপুর হইয়া আঠারনালায় উপস্থিত হইলেন। এখানে উপস্থিত হইলে মহাপ্ৰভু একাকী শ্ৰীজগন্নাথ-দর্শনে যাইতে ইচ্ছুক হইয়া নীলাচলে প্ৰবেশ করিলেন এরং জগন্নাথ মন্দিরে শ্ৰীজগন্নাথকে প্ৰেমভরে আলিঙ্গনে উন্থত হইলে মূচ্ছিত হইয়া পড়িলেন। তৎকালে বাসুদেব ভট্টাচাৰ্য শ্ৰীমন্দিরে *উপস্থিত ছিলেন। তিনি মুছিত নবীন সন্ন্যাসীকে ‘মহাপুরুষ’ জ্ঞানে প্ৰহারোস্তুত পড়িহারিগণের হস্ত হইতে রক্ষা