পাতা:শ্রীশ্রীনবদ্বীপ-দর্পণ - ব্রজমোহন দাস.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গ সুন্দর। vš শ্ৰীকৃষ্ণের জন্মস্থান - যেমন যোগপীঠ নামে অভিহিত হইয়ু থাকে, সেইরূপ শ্ৰীগৌরাঙ্গের জন্মস্থানও "মায়াপুর” নামে অভিহিত হইয়াছে। ফলতঃ মায়াপুর নামে কোনও স্বতন্ত্র স্থান ছিল না—এই নবদ্বীপই ‘মায়াপুর”। নবদ্বীপকে “মায়াপুর” বলিবার একটী কারণও আছে। শ্ৰীচৈতন্যদেবের সময়ে সেই কারণ ছিলনা, জজ্জন্ত তৎসাময়িক গ্রন্থে ঐ শব্দ পাওয়া যায় না। পরবর্তী সময়ে “শ্ৰীচৈতন্য অবতারত্ব" সম্বন্ধে হিন্দুসমাজে একটা গোল পড়িয়া গেল ; সুতরাং তাহার ভক্তগণকে তাহার অবস্তুরত্ব প্রতিপাদ্ধান জন্য বিশেষ চেষ্টত হইতে হইল। শাস্ত্রীয় বচন না থাকিলে, কেন্থই অবতার বলিয়া স্বীকার করেন না। তজ্জন্ত ভক্তগণ শাস্ত্রীয় প্রমাণ অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন এবং কোন গ্রন্থে ‘মায়াপুরে উভগবান জন্মগ্রহণ করিবেন", এইরূপ প্রমাণ পাইয়া, নবদ্বীপকেই "মায়াপুর" বলিয়া কল্পনা করিয়াছিলেন। অতএব বৰ্ত্তমান নবদ্বীপই মায়াপুর, মায়াপুর বলিয়া আর কোন স্বতন্ত্রক স্থান নাই।” মায়াপুর ও নবদ্বীপ অভেদ করিবার আরও কারণ আছৈ। শ্ৰীনিরহরি চক্ৰবৰ্ত্তী মহাশয়ের পরিক্রমা পদ্ধতির একস্থলে বর্ণিত আছে যে,- “অন্তদ্বীপ হইয়া মায়াপুরে। প্রবেশহি জগন্নাথ মিশ্রেীর মন্দিরে । মায়াপুর মহিমা অপার। বিবিধ প্রকারে প্রচারিলা গ্ৰন্থকার | নবদ্বীপ মধ্যে স্থান যত। এক মুখে তাহ বা কহিবে কেবা কত ॥ তার মধ্যে কহি যে প্রধান । চিনাডাঙ্গা পারডাঙ্গা আদি রম্য স্থান ৷” ( छ; ब्रः द्रांl: ऊ: ) গ্ৰন্থকার ক্রমে ক্ৰমে নবদ্বীপের সমস্ত দ্বীপগুলি ভ্ৰমণ করিয়া আসিয়া মায়াপুরে প্রবেশের পর উক্ত কথাগুলি বলিয়াছেন। উহাতে “চিনাডাঙ্গা” “পারডাঙ্গা” প্রভৃতি রম্য স্থান মায়াপুরান্তৰ্গত নবদ্বীপের মধ্যে বলিয়াছেন । ১১৮১ সালের ১লা শ্রাবণ নদীয়ার শ্যামসুন্দর চৌধুৰী মহাশয়, কৃষ্ণনগরের মহারাজ দিগের নিকট হইতে যে সনন্দ পান, তাহাতে লিখিত আছে যে,-“নদীয়ার চিনাডাঙ্গায় বেদঙ্গ ভট্টাচাৰ্য্যদিগের আওলাত বাটীর দক্ষিণে তোমার বসত বাটীর ভূমি দেওয়া হইল।” উক্ত চৌধুৰী মহাশয়ের বংশধরগণ আজিও বুড়াশিব তলায়ু, সেই ভিটায় বাস করিয়া আসিতেছেন। তাহা হইলে এই স্থান তৎকালে চিনাডাঙ্গা নামে এবং তাহার উত্তরবন্তী ভূমি বৈদিকপল্লী নামে অভিহিত হইত। এই বৈদিক পল্লীতেই শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গদেবের গৃহ অবস্থিত ছিল। শ্ৰীচৈতষ্ঠ ভাগবতেও “পারডাম্বার’ উল্লেখ আছে। যথা,- “সৰ্ব্ব নবদ্বীপে নাচে ত্ৰিভুবন রায়। গান্দিগাছা মাজিদা পারভাঙ্গা দিয়া যায়।” (চৈঃ ভাঃ ) গত বৈশাখ মাসের শ্ৰী পত্রিকায় ব্ৰজমোহন দাস মহাশয় নবদ্বীপান্তর্গত মণিপুরের নিকট এই পারডাঙ্গার নির্দেশ করিয়া ভ্ৰমে পতিত হইয়াছেন। ১৮৫৪ খৃঃ অব্দের রেনল্ড সাহেবের অঙ্কিত মানচিত্রে দৃষ্ট হয় যে, পারডাঙ্গা বৰ্ত্তমান নবদ্বীপের মিউনিসিপালিটি অফিসের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। ঐ স্থান খনন কালে যে শিবমূৰ্ত্তি পাওয়া যায়, তাহা “পারডাঙ্গার শিব” নামে অভিহিত হইয়া আজিও “যোগনাথ শিবমন্দিরে রক্ষিত হইতেছেন।” ( শ্ৰীনবদ্বীপে গৌরগৃহ-নির্ণয় ), শ্ৰীফণিভূষণ দত্ত কৃত। উপবোৰ বৰ্ণিত প্ৰবন্ধ দ্বারা স্পষ্টই উপলব্ধি হইতেছে যে, “শ্ৰীনবদ্বীপের ষে