পাতা:শ্রীশ্রীনবদ্বীপ-দর্পণ - ব্রজমোহন দাস.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t եrՀ * শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গ সুন্দর। আরম্ভ করিলেন-ও সব নাটকের অভিনয়ের কোন প্রয়োজন নাই ! এই সমস্ত কাগজপত্র ও মানচিত্ৰাদি তোমার দপ্তরে বান্ধিয়া রাখ, এ সমস্তের সাহায্যে যে লক্ষাধিক টাকা পুরস্কার পাইবে তাহা বুঝিয়াছি। “সঞ্জোগি ”। তোমার এতদূর আম্পৰ্দ্ধা যে, তুমি নবদ্বীপের আলোচনা করিতে চাও ! নবদ্বীপ হইতে বেটা, মানে মানে পলায়ন করু! নতুবা তোর অদৃষ্টে বহু বিড়ম্বনা ঘটবেক ।” ইত্যাদিরূপ সুমিষ্ট বাক্য বর্ণনা করিতে করিতে যখন তাহার বাকুরোধের উপক্রম হইল, ঐ সময় আর স্থির থাকিতে না পারিয়া,শ্ৰীযুক্ত তারা প্ৰসন্ন বাক্‌চী মহাশয় দণ্ডায়মান হইয়া উপস্থিত অন্যায় ব্যবহারের তীব্র প্রতিবাদ করিয়া বলিতে লাগিলেন - “এই ব্ৰজমোহন দাস বাবাজী যে সমস্ত কাগজপত্র ও প্রমাণাদি সংগ্ৰহ করিয়াছেন, তাহার একটীিও অমূলক নহে। আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে এক একটী বিষয় আলোচনা করিয়া পরম প্রীতিলাভ করিয়াছি। উনি কি প্ৰকৃতির লোক ও কোন কোন কাজ করিয়া আসিতেছেন, "ঠ্যাহা আমরা ভালরূপ অবগত আছি। উনি যাহা সংগ্রহ ও মানচিত্ৰাদি অঙ্কন করিয়াছেন তাহা অতি সত্য ঘটনা। ইহাতে কোনরূপ প্রতারণা কিম্বা সত্যগোপনের (কোনরূপ) চেষ্টা আন্দেী করেন নাই, বর্ণে বর্ণে সত্য নিহীত রহিয়াছে। উনি শ্ৰীনবদ্বীপের প্রকৃত তত্ত্ব প্রকাশ কার্ধে ব্ৰতী হইয়াছেন দেখিয়া, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হইয়াছি। দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গদেব-সম্পাকােত স্থানে মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, তাহাও আমরা শুনিয়াছি। আর এই শ্ৰীশ্ৰীগৌরবিগ্রহকে যে সেই মন্দিরে স্থাপন করিবার জন্য তিনি চেষ্টা করিয়াছিলেন তাহাও আমরা কতক কতক প্রাচীনগণের মুখে শুনিয়াছি। বিশেষতঃ এই শ্ৰীষষ্ঠদাস গোসাঞির কথা দ্বারাও প্রমাণিত হইয়াছে। তবে এখনকার মত, তখন কুমারের নিকট হইতে পাচ সিকা, দেড় টাকা দিয়া গেীর নিতাই বিগ্ৰহ ঘরে ঘরে বসাইতে কেহ সাহস করিতেন না ! ধৰ্ম্ম প্রাণ মহাত্মা গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ সেবাইতগণের অমতে এই শ্ৰীশ্ৰীগৌরাঙ্গ বিগ্রহকে লাইবার সুযোগ করিতে না পারিয়া, পাছে শ্ৰীশ্ৰীবিষ্ণুপ্রিয়াঠিাকুরাণীর সেবিত বিগ্রহের অসম্মান হয় এই আশঙ্কাতে, তিনি স্বীয় মন্দিরে শ্ৰীশ্ৰী রাধাগোবিন্দাদি শ্ৰীবিগ্রহের সেবা স্থাপন করিয়াছিলেন। এই শ্ৰীষষ্ঠিদাস গোসাঞি। শ্ৰীগৌরাঙ্গদেবের “নাড়ীপোতা স্থান" না। চাহিতে পারেন, "কিন্তু এমন দিন আসিতেছে, যে দিন ঐ স্থানের জন্যই লোক পাগল হইয়া ছুটিবে! ব্ৰজমোহন বাবাজীতো "শ্ৰীমহাপ্রভুর” শ্ৰীবিগ্রহের বিরুদ্ধে কোনরূপ আন্দোলন করিতেছেন না ; কেদার বাবু মায়াপুর নামক নব্য প্রকাশিত স্থানে শ্ৰীগৌরাঙ্গের জন্ম ভিটা সংস্থাপন করিলেন, তিনি যে নদীয়াকে "কুলিয়া” প্রকাশ করিলেন, আপনারা তো তাহার কিছুমাত্র প্রতিবাদ করিবার চেষ্টা করিলেন না । আর যিনি নিরপেক্ষ ভাবে থাকিয়া শ্ৰীনবদ্বীপের প্রাচীন স্থানগুলির সত্যতা নির্ণয়ে প্রাণান্ত যত্ন ও পরিশ্রম করিয়া আপনাদের আনুকূল্য করিতেছেন, তাহাকে এইরূপে সভায় আহবান করিয়া অন্যায়ারূপ অপমান করাতে আিম অত্যন্ত দুঃখ উপলব্ধি করিতেছি । আপনাদের এই ব্যবহারে শ্ৰীনবদ্বীপবাসীগণের অত্যন্ত নিন্দ ও কলঙ্ক হইবে।” ܝܐ নাম এরূপ বলিয়া তিনি উপবেশন করিলে, সেবাইতগণ কিছু অপ্রতিভ হই বটে, কিন্তু শ্ৰীযুক্ত ললিতমোহন গোস্বামীর আক্রোশ দূর হইল না। তিনি প্ৰকারাস্তরে আমাকে "মিথ্যাবাদী” ও “জোলিয়াত” বলিতে ছাড়েন নাই।