পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত তৃতীয় ভাগ.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরের বাটতে ঐরামকৃষ্ণ ১১ ছেলে ছটিকে, বাপ আচার্য্যের হাতে দিলেন। কয়েক বৎসর পরে । তারা গুরুগৃহ থেকে ফিরে এলো, এসে বাপকে প্রণাম করলে। * * * বাপের ইচ্ছা দেখেন, এদের ব্ৰহ্মজ্ঞান কিরূপ হয়েছে। বড় ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাপ ! তুমি ত সব পড়েছ, ব্ৰহ্ম কিরূপ বল দেখি ? বড় ছেলেটি বেদ থেকে নানা শ্লোক বলে বলে ব্রহ্মের স্বরূপ বুঝাতে লাগলো! বাপ চুপ করে রইলেন । যখন ছোট ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন, সে হেটমুখে চুপ করে রইল। মুখে কোন কথা নাই। বাপ তখন প্রসন্ন হয়ে ছোট ছেলেকে বললেন, ‘বাপু ! তুমিই একটু বুঝেছ। ব্ৰহ্ম যে কি, তা মুখে বলা যায় না।’ “মানুষ মনে করে, আমরা তাকে জেনে ফেলেছি। একটা পিপড়ে। চিনির পাহাড়ে গিছলো । এক দানা খেয়ে পেট ভরে গেল, আর এক দানা মুখে ক'রে বাসায় যেতে লাগলো, যাবার সময় ভাবছে,–এবার এসে সব পাহাড়টি লয়ে যাবো । ক্ষুদ্র জীবেরা এই সব মনে করে। জানে না ব্ৰহ্ম বাক্যমনের অতীত । - “যে যতই বড় হউক না কেন, তাকে কি জানবে ? শুকদেবাদি না হয় ডেও পিপড়ে,—চিনির আট দশটা দানা না হয় মুখে করুক। [ ব্ৰহ্ম সচ্চিদানন্দ স্বরূপ— নির্বিবকল্প সমাধি ও ব্রহ্মজ্ঞান ] “তবে বেদে পুরাণে যা বলেছে—সে কি রকম বলা জান ? একজন সাগর দেখে এলে কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে, কেমন দেখলে, সে লোক মুখ ই৷ করে বলে,—‘ও ! কি দেখলুম! কি হিল্লোল কল্লোল ! ব্রহ্মের কথাও সেই রকম। বেদে আছে--তিনি আনন্দ স্বরূপ—সচ্চিদানন্দ । শুকদেবাদি এই ব্রহ্মসাগর তটে দাড়িয়ে দর্শন স্পর্শন করেছিলেন । এক মতে আছে—তারা এ সাগরে নামেন নাই । এ সাগরে নামলে আর ফিরবার যো নাই। ।