পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত তৃতীয় ভাগ.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এ যে সুধার হ্রদ! অমৃতের সাগর। বেদে তাকে ‘অমৃত' বলেছে এতে ডুবে গেলে মরে না—অমর হয় । [ নিষ্কাম কৰ্ম্ম বা কৰ্ম্মযোগ ও জগতের উপকার’ ] Sri Ramakrishna and the European ideal of work “পূজা, হোম, যাগ, যজ্ঞ কিছুই কিছু নয়। যদি তার উপর ভালবাসা আসে তাহলে আর এ সব কৰ্ম্মের বেশী দরকার নাই । যতক্ষণ হাওয়া পাওয়া না যায়, ততক্ষণই পাখার দরকার ; যদি দক্ষিণে হাওয়া আপনি আসে, পাখা রেখে দেওয়া যায় .আর পাখার কি দরকার ? “তুমি যে সব কৰ্ম্ম করছে, এ সব সৎকৰ্ম্ম । যদি ‘আমি কৰ্ত্ত’ এই অহঙ্কার ত্যাগ করে নিষ্কামভাবে করতে পারে, তাহলে খুব ভাল। এই নিষ্কাম কৰ্ম্ম ক'বৃতে ক’বৃতেই ঈশ্বরেতে ভক্তি ভালবাস। আসে । এইরূপ নিষ্কাম কৰ্ম্ম করতে করতে ঈশ্বর লাভ হয় । “কিন্তু যত তার উপর ভক্তি ভালবাস আসবে, ততই তোমার কৰ্ম্ম কমে যাবে। গৃহস্থের বউ, পেটে যখন ছেলে হয়—শাশুড়ী তার কৰ্ম্ম কমিয়ে দেয় । যতই মাস বাড়ে, শাশুড়ী কৰ্ম্ম কমায় । দশ মাস হ’লে আদপে কৰ্ম্ম কৰ্ত্তে দেয় না, পাছে ছেলের কোন হানি হয়, প্রসবের কোন ব্যাঘাত হয় । ( হাস্য )। তুমি যে সব কৰ্ম্ম করছে। এতে, তোমার নিজের উপকার । নিষ্কামভাবে কৰ্ম্ম করতে পারলে চিত্তশুদ্ধি হবে, ঈশ্বরের উপর তোমার ভালবাসা আসবে। ভালবাসা এলেই তাকে লাভ করতে পারবে। জগতের উপকার মানুষে করে না, তিনিই করছেন ; যিনি চন্দ্র সূর্য্য করেছেন, যিনি মা বাপের স্নেহ, যিনি মহতের ভিতর দয়া, যিনি সাধু ভক্তের ভিতর ভক্তি দিয়েছেন । যে লোক কামনাশূন্ত হয়ে কৰ্ম্ম করবে সে নিজেরই মঙ্গল করবে।